
|| আব্দুল হামিদ সরকার ||
মনের করিডোরে নিত্য আসে
কার যেন ছায়া, মনের দীঘিতে সাঁতরে বেড়ায়
ক্লান্ত কায়ায় কে যেন? বললাম কে তুমি?
কাজল চোখে বললো আমি সুভাষিণী।
আরে সাহেব, চিনলে না মোরে?
ঐ যে চুলের বেনিতে ফুল গুজে
নিত্য আসি ভোরে।
খবর লই দমে দমে রাতের দ্বিপ্রহরে
কেয়া কদম্ব আর দোলনচাঁপা হাতে,
নিত্য খুঁজে ফিরি তোমার মনের অলিগলি।
তুমি যা বড্ড বেখেয়ালি, দীর্ঘ সময় থাকে তোমার
পাকস্থলী শূন্য, ঔষধ সেবন ও খাওয়া নাওয়া ভুলে
মজে থাকো কাব্যরসে।
তখন আমার কষ্ট লাগে বুকের গহীনে,
তোমাকে তো বাঁচতে হবে–
শিক্ষা, শিল্প উৎকর্ষতায় ভূমিকা রাখার অভিপ্রায়ে,
আমি তো আছি তোমার ছায়া হয়ে।
ওহ তাই, এবার থামো সুভাষিণী,
তোমার বচনে মায়ার সঞ্চার হয় বৈকি?
কি সুরালা ভাষ্য তোমার?
আমাকে নিয়ে এতো ভাবো তুমি?
কি লাভ তাতে সুভাষিণী?
তিলকআটা তোমার কামরাঙা ঠোঁটে
এবার ফুটলো মৃদু হাসি,
সুভাষিণী বলে চললো কাব্যরসের ফুলঝুরি।
জানো তোমাকে একটি বিশেষায়িত নামে ডাকি আমি,
” অপূর্ব ” যার নাম।
তোমার কর্মচাঞ্চল্য সত্যি অপূর্ব
অপূর্ব তোমার চেতনার রাশি
আর নিখাঁদ প্রেমের বর্ণছোঁয়া হাসি
তাই তো মুঠো মুঠো ভালোবাসি,
এতে লাভ ক্ষতির কিবা দেখলে তুমি?
ভালোবাসা যদি প্রেমের ছোঁয়া হয়
তাতে দোষ কি? নাই-বা হলো মিলন।
আমি তোমার জীবন ইতিহাসের অংশ হতে চাই
যেখানে প্রেম ও দ্রোহের সজীব নিঃশ্বাস থাকবে। তোমার শুভকামনায় রাত হয়,
রাঙা ভোর হয়, পাখি ডাকে।
আমি তোমার পবিত্রতার ছোঁয়া পেয়েছি
দেখেছি স্রষ্টা আর দেশপ্রেমের চেতনাবাহী মন।
এবার থামো সুভাষিণী —
আমার মনের গহীনে তোমাকে জানি
আপ্যায়নপ্রিয় সুভাষিণী তুমি,
আমার মনের বসতভিটায় ভাঙ্গাকুঠেরিতে
আসন দিয়েছি সেই যে কবে নীরবে নিঃশব্দে।
যার কোন আকার নেই, নিরাকার প্রেমের নায়িকা তুমি।
তুমি আমার স্মৃতির পেয়ালায়
ধোঁয়া উঠা এক কাপ কফি,
আর স্মৃতির রুমালে নরম হাতের ছোঁয়া।
যা নিরাকার প্রেমের সুরম্য অট্রালিকা সুভাষিণী।
নিরাকার প্রেমে একাকার মোদের হিয়া
ওগো সুভাষিণী, আমৃত্যু আমরা দুজন দুজনার।
তুমি আমার মনোবাগিচার পাতাবাহার
যার শাখা প্রশাখায় দুলতে থাকবে
পৃথিবীর তরে, নিঃশ্বাস যতদিন।
আমি আবির রঙে তোমায় খুঁজি
আমাদের নিরাকার প্রেমের গাঁথুনী
ইস্পাত কঠিন প্রতিজ্ঞায় ভরা
ভালো থেকো হে সুভাষিণী।
তুমি আমার অবেলায় পূর্ণতার ঢেউ,
সুভাষিণীর একগাল হাসি
আমার হৃদয়ের পরতে পরতে লেগে থাকে সব সময়,
আমি তোমার জ্বলজ্বলে রঙিন ছবির নীরব দর্শক।
লেখক: বিশিষ্ট কবি ও ঔপন্যাসিক এবং সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, বেলকুচি বহুমুখী মহিলা ডিগ্রি কলেজ, বেলকুচি, সিরাজগঞ্জ। রচনাকাল: ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫।