
|| ডা. আনোয়ার সাদাত ||
মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে বাস করে। সমাজের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক আচার-ব্যবহার সুন্দর হওয়া বাঞ্ছনীয়। অন্যের সাথে চলাফেরা ও আচার-আচরণে তার শিষ্টাচার বা ব্যবহার কেমন হবে, কথাবার্তা কেমন হবে, সে বিষয়ে ইসলামে সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা রয়েছে। একজন মুমীন বা মুসলমান সে নির্দেশনা অনুযায়ী নিজেকে পরিচালিত করবে। সেগুলি পালন করলে সমাজের অন্যান্য সদস্যদের সাথে তার সম্পর্ক সুন্দর হবে, সাথে সাথে সে অনুকরণীয় আদর্শে পরিণত হবে।
সুন্দর কথা ও আচার-ব্যবহারের কারণে মহানবী (সা.) সবার মধ্যে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী ছিলেন। তাঁর কোমল আচরণের প্রশংসা করে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহর অনুগ্রহে আপনি তাদের প্রতি কোমল হৃদয়ের ছিলেন, আপনি কঠোর মনের হলে তারা আপনার আশপাশ থেকে সরে পড়ত, অতএব আপনি তাদের ক্ষমা করুন, তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন ও সব কাজে তাদের সঙ্গে পরামর্শ করুন।’ (সুরা আলে ইমরান)
সুন্দর কথা না বললে চুপ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে নীরব থাকাও ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের ওপর ঈমান আনে, সে যেন ভালো কথা বলে কিংবা চুপ থাকে। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের ওপর ঈমান আনে, সে যেন প্রতিবেশীকে সম্মান করে। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের ওপর ঈমান আনে, সে যেন অতিথিকে সম্মান করে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৭৫)
রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যার আচার-ব্যবহার সুন্দর, সে আমার সবচেয়ে বেশি প্রিয় এবং আমার সবচেয়ে কাছে থাকবে।’ (সুনানে তিরমিজি)।
যুগে যুগে নবী-রাসূলগণ অন্ধকারে নিমজ্জিত, পথহারা, দিশেহারা মানুষদেরকে আলোর পথ দেখাতে সক্ষম হয়েছিলেন সুন্দর আচরণের মাধ্যমে। আজকের দিনে এসেও মানুষকে সত্য সুন্দর কল্যাণের পথে আনার ক্ষেত্রে উত্তম ব্যবহার একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে ভূমিকা পালন করছে।
সুন্দর পরিবার ও সমাজ গঠনে সুন্দর আচরণ ও কথা বার্তার গুরুত্ব অপরিসীম।
লেখক: ইসলামিক স্কলার, সাংবাদিক ও চিকিৎসক (খুলনা)।