
|| শেখ শাহরিয়ার | জেলা প্রতিনিধি (খুলনা) ||
টানা বৃষ্টিতে স্থবির হয়ে থাকা খুলনা ওয়াসার পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প আবারও গতিতে ফিরেছে। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে মজিদ স্মরণী থেকে বন্ধ থাকা ম্যানহোল নির্মাণের কাজ পুনরায় শুরু হয়। ধাপে ধাপে এম এ বারী সড়ক, কেডিএ অ্যাভিনিউ ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের গলিতে পাইপ স্থাপন ও পিট নির্মাণ চলছে।
ওয়াসার হিসাবে, অতীতে খুলনায় পয়ঃবর্জ্য শোধনের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। বাসাবাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে বর্জ্য সরাসরি ড্রেন হয়ে নদী-খালে মিশত, যা পরিবেশকে ভয়াবহভাবে দূষিত করছিল। এই পরিস্থিতি বদলাতে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে নেয়া হয় ‘খুলনা পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প’।
২০২০ সালে একনেকে অনুমোদিত এই প্রকল্পের ব্যয় ২ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। করোনা, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ও অতি বৃষ্টির কারণে প্রকল্পের কাজ টানা কয়েক দফা স্থগিত ছিল। এরপরও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে—১৬টি ওয়ার্ডে পরিকল্পিত ২৫৫ কিলোমিটারের মধ্যে ১৭২ কিলোমিটার পাইপ বসানো হয়েছে। ম্যানহোল স্থাপন হয়েছে ৭ হাজার ৪১৯টি, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ১১ হাজারের বেশি।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিটি বাড়ির সামনে পাইপ সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। এসব পাইপের মাধ্যমে বর্জ্য যাবে ৮টি পাম্প স্টেশনে, সেখান থেকে মাথাভাঙ্গা ও ঠিকারার শোধনাগারে পাঠানো হবে। শোধনাগারের কাজ চলমান আছে।
এদিকে সবচেয়ে বড় ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে খোঁড়া সড়ক। ওয়াসা জানিয়েছে—পাইপ বসানোর পর সড়ক পুনর্গঠনের জন্য কেসিসিকে আগেই ১১২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অনেক এলাকাতেই সড়ক সংস্কার না হওয়ায় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ দিন দিন বাড়ছে।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক সেলিম আহমেদ বলেন,
“টাকা দেওয়ার পরও কেসিসি অনেক জায়গায় কাজ করেনি। এখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি—যেখানে কাজ শেষ হবে, সেখানেই ওয়াসা নিজ উদ্যোগে ভাঙা সড়ক ঠিক করবে। এতে জনগণের ভোগান্তি কমবে।”
