
|| শেখ শাহরিয়ার | জেলা প্রতিনিধি (খুলনা) ||
তদন্তে আধিপত্য ও জমি বিরোধের যোগসূত্র
খুলনা মহানগরীর আড়ংঘাটা থানাধীন শলুয়া বাজারে এমদাদুল হক মিলন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় এখনো মামলা দায়ের হয়নি। তবে পুলিশ আধিপত্য বিস্তার, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ও পূর্বশত্রুতার জের ধরে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে।
গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শলুয়া বাজারে বসে চা খাচ্ছিলেন এমদাদুল হক মিলন। এ সময় দুটি মোটরসাইকেলযোগে চারজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বাজারে প্রবেশ করে প্রথমে দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে মিলনের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ সময় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে স্থানীয় পশু চিকিৎসক দেবাশীষ বিশ্বাস আহত হন। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানা গেছে।
নিহত এমদাদুল হক মিলন শলুয়া বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালেও কাজ করতেন বলে স্থানীয়রা জানান। এলাকাবাসীর দাবি, প্রতিবাদী স্বভাবের কারণে তিনি বিভিন্ন সময় সন্ত্রাসীদের রোষানলে পড়েন। এর আগেও ৪ থেকে ৫ মাস আগে তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। সে ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যান তিনি। তখন হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছিল।
এলাকার একটি সূত্র জানায়, সুজন সরকার নামে এক সন্ত্রাসীর সঙ্গে মিলনের দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। পূর্বে হত্যার উদ্দেশ্যে তার ওপর হামলা চালানো হয়েছিল। বর্তমান হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ওই সন্ত্রাসীর সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে ওই সূত্র দাবি করেছে।
আড়ংঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ শাহাজাহান আহমেদ জানান, ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার সন্ধ্যায় জানাজা নামাজের পর মরদেহ দাফন করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কেউ মামলা দায়ের করতে আসেনি। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হলেও কাউকে শনাক্ত বা মোটরসাইকেলের নম্বর চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া ভয়ে স্থানীয়রা অনেকেই মুখ খুলছেন না।
কেএমপি উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) সুদর্শন রায় বলেন, ঘের ও জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধসহ এলাকাভিত্তিক আধিপত্য বিস্তার এবং পূর্বশত্রুতার বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চলছে। দ্রুত হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেপ্তারের আশা প্রকাশ করেন তিনি।
