বুধবার, নভেম্বর ২৬

শরৎকে বরণ করে নিতে ইবিতে ‘শরৎ সম্ভাষণ’

|| আবির হোসেন | ইবি প্রতিনিধি ||

শরৎকে বরণ করে নিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) শরৎ সম্ভাষণের আয়োজন করেছে পরিবেশবান্ধব সামাজিক সংগঠন ‘অভয়ারণ্য’। ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর দুই দিনব্যাপী এই আয়োজনে গ্রাম-বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী বিনোদন বায়োস্কোপ দেখতে ক্যাম্পাসের ডায়না চত্বরে ভিড় জমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, অনুষ্ঠানস্থল সাজানো হয় প্লাস্টিক ও বর্জ্য থেকে তৈরি রঙিন সজ্জা দিয়ে। ঝুলানো হয়েছিল কাগজের মেঘ, পাখি আর শরৎ ঘন ডেকোরেশন। দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শিত করা হয় ঐতিহ্যবাহী মাটির শিল্পপণ্য। এছাড়া খাঁচা সাজানো হলেও ভেতরে কোনো পাখি রাখা হয়নি—যেন উন্মুক্ত আকাশে স্বাধীনতার প্রতীক ফুটে ওঠে। সবকিছুর মধ্যেই ছিল শরৎকে বরণ আর পরিবেশবান্ধব সংস্কৃতি প্রচারের বার্তা। শুধু সাজসজ্জা নয়, এবারের মূল আকর্ষণ ছিল পুরোনো দিনের বিনোদন বায়োস্কোপ। দর্শনার্থীদের জন্য এতে তুলে ধরা হয়েছে চর্যাপদ থেকে শুরু করে আধুনিক বাংলা সাহিত্য–সংস্কৃতি। তরুণ প্রজন্মকে বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে এই উদ্যোগ নিয়েছে তারা।

দর্শনার্থী শিক্ষার্থী তানজিলা রহমান বলেন, শরৎ সম্ভাষণে এসে মনে হলো যেন আমরা ছোটবেলার গ্রামবাংলায় ফিরে গিয়েছি। প্লাস্টিক ও বর্জ্য দিয়ে বানানো সাজসজ্জা, কাগজের মেঘ, রঙিন পাখি আর মাটির তৈরি জিনিসগুলো সুন্দর ছিল। সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে বায়োস্কোপ। বইয়ে পড়েছি বায়োস্কোপের কথা, কিন্তু আজ সরাসরি দেখে বুঝলাম আমাদের পূর্বপুরুষেরা কীভাবে বিনোদন পেতেন। খাঁচা খালি রেখে পাখিকে আকাশে উড়ার প্রতীকী বার্তাটাও দারুণ লেগেছে। পরিবেশবান্ধব ও সংস্কৃতিনির্ভর এমন আয়োজন তরুণ প্রজন্মকে নতুন করে ভাবাবে এবং আমাদের সংস্কৃতি ও প্রকৃতি বাঁচিয়ে রাখতে উদ্বুদ্ধ করবে।

অভয়ারণ্যের সহ-কোষাধ্যক্ষ সাদিয়া সাবরিনা বলেন, আগে শরৎকালে মেলা বসতো, সেখানে বায়োস্কোপ ছিল অন্যতম আকর্ষণ। কিন্তু এখনকার প্রজন্ম জানেই না বায়োস্কোপ কী। তাই আমরা বায়োস্কোপ এনেছি—যেন সবাই কাছ থেকে দেখে বাংলা সংস্কৃতিকে বুঝতে পারে। পাশাপাশি খাঁচায় পাখি না রেখে উন্মুক্ত আকাশে উড়ার বার্তাও দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে তরুণ প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দিতেই আমাদের এই আয়োজন। আমরা যেহেতু পরিবেশবাদী সংগঠন, তাই বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের মাধ্যমে সাজসজ্জা করেছি। মাটির তৈরি জিনিসপত্রও এখানে বিক্রি হচ্ছে যেন শিল্পীরা টিকে থাকতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *