
|| শাকিবুল হাসান | রাবি প্রতিনিধি ||
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রতিবাদী কবিতা পাঠ। সাংস্কৃতিক সংগঠন শব্দকলা কর্তৃক আয়োজিত প্রোগ্রামটি রবিবার (১৩ এপ্রিল) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে অনুষ্ঠিত হয়। সাংস্কৃতিক প্রতিবাদের স্লোগান ছিল ‘ফিলিস্তিনে জ্বলছে আগুন জ্বলছে আগুন বক্ষে, বিশ্ববাসী দাঁড়াও রুখে মানবতার পক্ষে’।
উদ্ভোধনী বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, কবিতা যেমন কোমলতার কথা বলতে পারে তেমনি দ্রোহ, বিদ্রোহ,যুদ্ধের ভাব প্রকাশের অনন্য মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। আমি মনে করি, যে যুদ্ধটি চলছে সেটি অবিচারের বিরুদ্ধে সুবিচারের যুদ্ধ, মানুষের অধিকারের বিরুদ্ধে অধিকার হরণের যুদ্ধ। যুদ্ধের অনেকগুলো দিক আছে, মাঠে যুদ্ধ হয়, জ্ঞানের রাজ্যে যুদ্ধ হয়, ঠিক তেমনি সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও যুদ্ধ হয়।
তিনি আরও বলেন, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের যুদ্ধ আমাদের উজ্জীবিত করে এবং প্রতিবাদী হতে শেখায়। আজকের এ আয়োজন খুব সুন্দর এবং ব্যাতিক্রমি উদ্যোগ বলে আমি মনে করি। এ ধরনের সাংস্কৃতিক উদ্যোগ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন হচ্ছে তেমনিভাবে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ছড়িয়ে পড়ুক।
গাজায় ইসরায়েলি নিপীড়নকে ধিক্কার জানিয়ে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, বিভিন্ন যুদ্ধ-বিদ্রোহ যেটা মাঠ পর্যায়ে হয়েছে সেখানে বিজয় অর্জনের জন্য সাংস্কৃতিক প্রোগ্রাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমরা একাত্তরে বিজয় অর্জন করেছি। এই একাত্তরকে ঘিরে আমাদের অনেক বড় সাংস্কৃতিক বিজয় অর্জিত হয়েছে। আজকে সারা পৃথিবী জুড়ে যে প্রতিবাদ চলছে এবং গাজায় যে নিপীড়ন চলছে, মানবতা ভূলন্ঠিত হচ্ছে আমরা চরমভাবে ধিক্কার জানাই।
তিনি আরও বলেন, আজকের এই সাংস্কৃতিক প্রতিবাদের মাধ্যমে আমরা ইসরায়েলকে আহ্বান জানাতে চাই এই নিপীড়ন বন্ধ করুন। আপনারা সামান্য কিছু স্বার্থের জন্য একটি গোষ্ঠীকে নিধন করতে চাচ্ছেন যা কোনোভাবেই পৃথিবীর মানুষ মেনে নিবে না।
উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন বলেন, কবি কাজী নজরুল ইসলাম যখন বৃটিশদের বিরুদ্ধে তার কবিতার মাধ্যমে সংগ্রাম চালিয়েছিলেন তখন কিন্তু মিডিয়া এতো শক্তিশালী ছিলো না, কিন্তু তবুও তাকে কবিতা লিখে কারাবরণ করতে হয়েছিল। আমার বিশ্বাস, এই কবিতার যে প্রচন্ড শক্তি আছে তা ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর গদিকে নাড়িঁয়ে দিবে।
শব্দকলা সাহিত্য সংগঠনের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান আকন্দ বলেন, শব্দকলা সবসময় মানবতার পক্ষে কাজ করে। এ পর্যন্ত আমরা যত কাজ করেছি তা সবকিছুই বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও মানবতার জন্য। ভিডিও গেইমসের মতো যেভাবে গাজা ও রাফা শহর ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে তারই প্রতিবাদে আজকে আমরা কবিতা পাঠের আয়োজন করেছি।
এসময় রাজশাহী শহরের কবিগণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ এবং বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।