
|| নিউজ ডেস্ক ||
পবিত্র রমজান মাসেও ভারতের মুসলমানদেরকে হত্যা-নির্যাতন ও মসজিদে হামলাকারী হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীদেরকে কঠোরভাবে দমন করতে ভারত সরকারকে চাপ দিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ।
রবিবার (১৬ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
এ সময় ‘হিন্দু মুসলিম এক হও, নিপীড়ন রুখে দাও’ ‘হিন্দুত্ববাদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’ ‘মানবতা দিচ্ছে ডাক, ভারতীয় মুসলমানরা মুক্তি পাক’ ‘মুসলিম লাইভ ম্যাটারস’ ‘স্টপ দ্য জেনসাইড, স্টপ দ্য হেইট, জাস্টিস ফর ইন্ডিয়ান মুসলিমস’ ‘রামাদান ম্যসাকার মাস্ট এন্ড’ ইত্যাদি স্লোগান দেওয়া হয়।
সমাবেশে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াহেদের সভাপতিত্বে বক্তৃতা করেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের রাজনৈতিক প্রধান মো. আনিছুর রহমান ও সহকারী সদস্য সচিব গালিব ইহসান।
সমাবেশে আনিছুর রহমান বলেন, ভারতে গত কয়েক দিন ধরে মুসলমানদের ওপর অকথ্য নির্যাতন নিপীড়ন চালাচ্ছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সরকারি দল বিজেপির সন্ত্রাসীরা। তারা পবিত্র রমজান মাসেও রোজাদার মুসলমানদের পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা করছে। জুমার নামাজের সময় মসজিদ ঢেকে দিচ্ছে, নামাজ পড়তে বাধা দিচ্ছে। কিন্তু প্রতিটি ঘটনায় ভারত সরকার নির্লিপ্ত থাকছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে যেকোনো সাম্প্রদায়িক হামলা হলে সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। আমাদের ইসলামী দলগুলোসহ সর্বস্তরের জনগণ প্রতিবাদী হয়। কিন্তু ভারতে কোনো সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় ব্যবস্থা নেয় না। দেশটির জনগণও আমাদের মতো প্রতিবাদ জানায় না।
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের রাজনৈতিক প্রধান বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলো বাবরী মসজিদ ভাঙা ও গুজরাটের গণহত্যায় জড়িত কুখ্যাত সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি নরেন্দ্র মোদি। তার সরকার ও দল মুসলমানদের হত্যায় সরাসরি জড়িত। তারা নিজেদের সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে চুপ থাকলেও আমাদের প্রধান উপদেষ্টা বিশ্বখ্যাত ব্যক্তিত্ব ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। তাই এখন আমাদের সরকারের উচিত ভারতের মুসলমানদের পক্ষে কথা বলা। জাতিসংঘে বিষয়টি উত্থাপন করা।
ভারতীয় মুসলমানদের রক্ষায় বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, পবিত্র রমজান মাস মুসলমানদের কাছে সংযম ও সংবরণের মাস। এসময় মুসলমানরা সারাদিন রোজা রেখে ইফতারের জন্য অপেক্ষা করেন। কিন্তু ভারতের মুসলমানদের কপালে রমজানেও শান্তির বদলে হিন্দুত্ববাদী আক্রমণ, নিরাপত্তার বদলে সহিংসতা এবং নিজ বাড়িতে নিরাপদে ইফতারের বদলে রাস্তায় তাদের রক্ত ঝরছে।
তিনি বলেন, ভারতে মুসলিম নির্যাতন মোটেই দু-একটি ঘটনায় সীমাবদ্ধ নয়। সেখানে অনেক বড় পরিসরে মসজিদ আক্রান্ত, বাড়ি-ঘর উচ্ছেদ, পরিবারকে বিচ্ছিন্ন, তরুণদের গণপিটুনি, নারীদের হেনস্থাসহ সমগ্র মুসলিম জাতীকে নিজ ভূমিতে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করা হয়েছে।
ভারতের মুসলমানদের ওপর এ নির্যাতন নিপীড়ন বন্ধে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের সরকারকে জোরালো ভূমিকা রাখার দাবি জানান এ ছাত্র নেতা।
সমাবেশে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সদস্য সচিব হাসান মোহাম্মদ আরিফ, যুগ্ম-আহ্বায়ক সাইয়েদ কুতুব, সহকারী সদস্য সচিব মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার, কেন্দ্রীয় সদস্য তামিম আনোয়ার, ওয়াসিম আহমেদ, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের সদস্য সচিব ফজলুর রহমান, সহকারী সদস্য সদস্য সচিব মোঃ আশরাফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ ও বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলামসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।