|| মাওলানা মো: ওমর ফারুক রুহানী ||
কিছু কিছু মোল্লাতন্ত্রের ফতুয়ার চাপে আমরা ইসলামী সংস্কৃতির অনেক কিছুই হারিয়ে ফেলছি (এখানে মোল্লাতন্ত্রের ফতুয়ার চাপ বলতে তথাকথিত কিছু কিছু সহীহ হাদীসের অনুসারী তন্ত্রের ফতুয়ার চাপ উদ্দেশ্য)। ইসলামী কৃষ্টি-কালচার বিদায়ের সাথে সাথে সে স্থলে বিজাতীয় সংস্কৃতি ঢুকে পড়ছে। এতে তরুণেরা ইসলামী সংস্কৃতি ভুলে ইবাদত বিমুখ হয়ে অন্যদের আচার-অনুষ্ঠান পালনে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে।
এ চাপে আমরা মিলাদ অর্থাৎ দোয়ার অনুষ্ঠান (ﷺ) উৎযাপন ছেড়ে দিয়েছি, বিভিন্ন পাড়ায়, মহল্লায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন: নতুন ঘর দিলে দোয়ার অনুষ্ঠান-সহ এরকম বিভিন্ন ক্ষেত্রে দোয়ার অনুষ্ঠান ছেড়ে দিয়েছি। এরপর একে-একে ছাড়লাম ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী, শবে বরাত, শবে মেরাজ, আশুরা, ফাতেহা-ই ইয়াজদাহুম, মৃত্যুবার্ষিকী, জেয়াফত, নাতে রাসুল, জিকির, ইসলামিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
সব ছেড়ে আমরা যখন সহীহ্ সেজে বসলাম, তখন চোখ ফিরিয়ে দেখি নিজ আঙ্গিনায় পালন হচ্ছে- সুন্নাতে খাতনা নামে সাউন্ডবক্স দিয়ে ডিজে পার্টি, ছেলেমেয়ে-সহ অশ্লীল ডান্স, পবিত্র বিবাহের অনুষ্ঠান অপবিত্র করার জন্য অশ্লীল ডিজে ডান্স, অশ্লীল গান-বাজনা, বিভিন্ন গ্রামে অশ্লীল নাটক, ফরেন্দি পালা, যাত্রা পালা, শরীয়ত বিরোধী অশ্লীল পালা গান, হ্যালোইন, ইস্টার ফ্রাইডে, হ্যাপি নিউ ইয়ার, ভ্যালেন্টাইন্স ডে, কিস ডে, হাগ ডে, মঙ্গল শোভাযাত্রার মতন অশ্লীলতায় ভরা দিবস আর সংস্কৃতি।
আমরা আজ ঈদের দিন অলস হয়ে ঘুমাই আর ভ্যালেন্টাইন্স ডের সারা দুপুর রোদে পুড়ে বেহায়াপনা করি।
আফসোস আমাদের দৈন্যতার প্রতি, আফসোস আমাদের উদাসীনতার প্রতি। আল্লাহ আমাদের মধ্যে আবার ইসলামের সোনালী অতীত আর নফল আমলের উৎসব ফিরিয়ে আনুন।
পরবর্তী প্রজন্ম যেনো উৎসব আর সংস্কৃতির দৈন্যতার ফলে ঈমান হারা না হয়ে যায়। দ্বীনে ইসলামের মধ্যে যেনো বেদ্বীনের সংস্কৃতি প্রবেশ না করে।
যে সমস্ত নামে ধর্মীয় আলেম বক্তা নামের জাহেলরা বেদাত/হারাম/শিরিকের ফতোয়া দিয়ে ধর্মীয় সংস্কৃতি উঠিয়ে দিয়ে অনইসলামীক, ইসলামীক শরীয়ত বিরোধী সংস্কৃতি প্রবেশ করার সুযোগ করে দিচ্ছে, আল্লাহপাক তাদের হাত থেকে আমাদের ঈমান আমল এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে কে রক্ষা করুক।
আমিন।
লেখক: আরবী প্রভাষক, বোয়াইলমারী কামিল মাদ্রাসা, সাথিয়া, পাবনা।