বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পক্ষে শুরু থেকে সরব ছিলেন অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন। পরবর্তী সময়ে ছাত্রদের পক্ষে রাজপথেও নেমেছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ওই সময়ের অনেক দুর্নীতির তথ্য এখন সামনে আসছে। এবার দুর্নীতি প্রসঙ্গে আওয়াজ তুললেন বাঁধন।
অভিনেত্রীর দাবি, মুজিব সিনেমাও রেহাই পায়নি এই দুর্নীতির করালগ্রাস থেকে। তাই তিনি এ সিনেমার খরচের হিসাব দেখতে চান।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এমন দাবি করেন বাঁধন। অভিনেত্রী বলেন, ‘মুজিব নামে যে সিনেমাটি বানানো হয়েছে, আমি সেটার হিসাব চাই। আমি দেখতে চাই, এত বাজেটের একটা সিনেমা কিভাবে এত খারাপভাবে বানানো যায়!’
সিনেমাটির নির্মাণে ক্ষোভ প্রকাশ করে বাঁধন বলেন, ‘কোটি কোটি টাকা বাজেট নিয়ে কী সিনেমাটা বানাল! সেই টাকাগুলো কোথায় গেলো, এই হিসাব তো আমি দেখতে চাই। আমার খুবই কষ্ট হয়েছে, দেশের টাকা দিয়ে বানানো, আমাদের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে বানানো সিনেমা, যা ইচ্ছা তাই একটা বানিয়ে দেওয়া হলো!’
এর আগেও মুজিব সিনেমার টিজার, ট্রেলার নিয়ে নানা সমালোচনা হয়েছে। আলোচিত হয়েছে বাজেটের বিষয়টিও। সমালোচনার পাশাপাশি বাজেট নিয়েও নানা তথ্য ছড়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
কেউ কেউ সিনেমাটির বাজেট ১২০ কোটি বলেও দাবি করেন। সিনেমাটির নির্বাহী প্রযোজক ও বিএফডিসির তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, সিনেমাটি নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৭০ কোটি রুপির (বাংলাদেশি টাকায় ৮৩ কোটি টাকা) সমঝোতা চুক্তি হয়।
২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের পক্ষে তৎকালীন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও ভারতের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী প্রকাশ জাভেদকর চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি অনুযায়ী, মোট বাজেটের ৬০ শতাংশ অর্থ দিয়েছে বাংলাদেশ। সে হিসাবে বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকে বাংলাদেশের বিনিয়োগ প্রায় ৫০ কোটি টাকা। অন্যদিকে বাকি ৪০ শতাংশ অর্থ ভারতের বিনিয়োগ করার কথা; বাংলাদেশি টাকায় যা ৩৩ কোটির বেশি।
‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’-এ বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ। তিনি পারিশ্রমিক হিসেবে নিয়েছেন মাত্র এক টাকা। এক টাকা পারিশ্রমিক নেন ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের চরিত্রের অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশাও। সিনেমার অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন নুসরাত ফারিয়া, রিয়াজ আহমেদ, দিলারা জামান, চঞ্চল চৌধুরী, সিয়াম আহমেদ, জায়েদ খান, খায়রুল আলম সবুজ, রাইসুল ইসলাম আসাদ, গাজী রাকায়েত, তৌকীর আহমেদ, মিশা সওদাগরসহ শতাধিক শিল্পী।