
|| ডা. আনোয়ার সাদাত ||
মানুষ আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি। খলিফা তাকেই বলা হয়, যে অন্য কারো মালিকানায় তারই প্রদত্ত ক্ষমতা ইখতিয়ার তার প্রতিনিধি রূপে ব্যবহার করে। সে নিজের ইচ্ছা অনুসারে কাজ করার কোনো অধিকার রাখে না। বিশেষ করে যারা আল্লাহর উপর ঈমান রাখে।
খলিফা কখনো মালিক হতে পারে না। খলিফার মর্যাদা হলো প্রতিনিধির মর্যাদা।আল্লাহর দেওয়া নীতিমালা ও বিধি-বিধান অনুসারেই তাকে চলতে হবে, তার দেয়া সব কিছু ভোগ ও ব্যবহার করতে হবে। সুতরাং মানুষের জন্য আল্লাহর দেওয়া সীমা লংঘন করা ও যথেচ্ছাচার প্রদর্শনের কোনো অবকাশ নেই। যে কেহই সীমা লংঘন করবে, সেই খিলাফাতের মহান দায়িত্ব থেকে বিচ্যুত হবে। পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট বলে সে তখন আল্লাহর নিকট গণ্য হবে।
খলিফা হচ্ছে ঐ ব্যক্তি, যে কারো স্থলাভিষিক্ত হয়ে কোনো দায়িত্ব পালন করে। কারো কারো মতে, প্রত্যেক ঐ ব্যক্তিকে খলিফা বলা হয়, যার উপর পৃথিবীবাসীর ব্যবস্থাপনা ও তাদের ভালোমন্দ দেখাশুনার দায়িত্ব বর্তায়”।
আল্লাহ বলেন, তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদেরকে এ মর্মে ওয়াদা দিয়েছেন যে, তিনি নিশ্চিতভাবে তাদেরকে যমীনের খিলাফত দান করবেন, যেমন তিনি প্রতিনিধিত্ব প্রদান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে।” সূরা আল নূর ৫৫।
এখানে আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের যে খিলাফত দানের ওয়াদা করেছেন, সে মুসলমান যারা হবে, তারা নামকাওয়াস্তে মুসলমান হবে না। বরং তারা হবে সত্যিকারের ঈমানদার, হবে নেক আমলকারী এবং চরিত্রের দিক দিয়ে উন্নত চরিত্রের অধিকারী। ঈমানদার মুসলমানদের দুনিয়াতে খিলাফত দান করবেন বলে আল্লাহ তায়ালা ওয়াদা করেছেন। শুধুমাত্র মুখে মুখে ঈমানের দাবি করলে আল্লাহর নিকট থেকে তাঁর প্রতিশ্রুতি লাভ করা যাবে না। প্রকৃতপক্ষে, ঈমানদার ব্যক্তিরাই খলিফা হবার যোগ্য বা খলিফা হতে পারেন। কারণ, তারাই আল্লাহ তায়ালার শর্ত মুতাবেক খিলাফতের যে দায়িত্ব তা যথাযথভাবে পালন করতে সক্ষম।
লেখক: ইসলামিক স্কলার, সাংবাদিক ও চিকিৎসক (খুলনা)।