মঙ্গলবার, জুলাই ২২

ভিজিডি কার্ড বিতরণে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ; ফের বিতর্কের কেন্দ্রে বড়ভিটা ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু

|| কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ||

ভিজিএফ চাল বিতরণে দুর্নীতির অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার পর হাইকোর্টের স্থগিতাদেশে দায়িত্ব ফিরে পেয়েছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু। দায়িত্বে ফিরে ফের বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন তিনি। এবার দুস্থ মহিলা উন্নয়ন কর্মসূচির (ভিজিডি) কার্ড বিতরণে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ডিডব্লিউবি (ভিজিডি) কর্মসূচিতে বড়ভিটা ইউনিয়নের জন্য ৮৩৫ জন দুস্থ মহিলার কার্ড বরাদ্দ হয়। তবে কার্ডের তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা করে আদায়ের অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

অভিযোগে বলা হয়, টাকা নেওয়ার পরও অনেক গরিব মহিলার নাম চূড়ান্ত তালিকায় রাখা হয়নি। বরং অর্থের বিনিময়ে সচ্ছলদের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

৬নং ওয়ার্ডের ইন্নি খাতুন বলেন, “আমরা গরিব মানুষ, ভিজিডি কার্ডের আশায় আবেদন করেছিলাম। কিন্তু টাকার অভাবে আমাদের নাম বাদ গেছে। যারা টাকা দিয়েছে, তারা পেয়েছে—তারা গরিব না।”

৯ নম্বর ওয়ার্ডের আয়েশা, নূরনাহার ও আছপি বেগম জানান, “চেয়ারম্যান মিন্টু আমাদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা করে দাবি করে। আমরা ধার করে টাকা দিই, এখন দেখি চূড়ান্ত তালিকায় নামই নেই।”

সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জান্নাতি খাতুন আলো বলেন, “চেয়ারম্যান সাময়িক বরখাস্তের সময় আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলাম। তখন ভিজিডি কার্ড বণ্টনে লটারির মাধ্যমে নাম নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু চেয়ারম্যান দায়িত্বে ফিরে এসে অগ্রাধিকার দেখিয়ে দ্রুত তালিকা পাঠান। টাকা লেনদেনের বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি, তবে নিশ্চিত নই।”

চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি কারো কাছ থেকে একটি টাকাও নেইনি।”

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সোহেলী পারভীন বলেন, “আমি বাইরে আছি, অফিসে ফিরে বিস্তারিত জেনে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুম জানান, “বিষয়টি তদন্তাধীন, প্রমাণ মিললে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে এ ঘটনা। আবারো বিতর্কের কেন্দ্রে চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু, যার বিরুদ্ধে আগেও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। এবার দেখার পালা, তদন্তে কী উঠে আসে—আর প্রশাসন কতটা কার্যকর ব্যবস্থা নেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *