বৃহস্পতিবার, জুলাই ৩১

বেলকুচিতে রাসেল হত্যার একমাস পেরিয়ে গেলেও আটক হয়নি আসামী

|| ভি কে জয় | বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি ||

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে রাসেল হোসেন (৩০) হত্যার একমাসে পেরিয়ে গেলেও এখনো এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত কোনো আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ফলে ভুক্তোভোগী স্বজন ও এলাকাবাসীর মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এদিকে রাসেল হত্যার ঘটনায় ও আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকালে বেলকুচি থানার সামনে ভুক্তোভোগীর স্বজন ও গাড়ামাসি গ্রামের কয়েকশত নারী পুরুষ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। উক্ত মানববন্ধনে দ্রুত আসীমীদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।

চলতি বছরের গত ১২ অক্টোবর সকালে ঢাকার আশুলিয়ার উত্তর গাজীরচট এলাকার একটি ভবনের ৩য় তলা থেকে কোপানো ও রক্তাক্ত অবস্থায় রাসেল হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। রাসেল হোসেন সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থানার গারামাসি এলাকার বাবুল সরকারের ছেলে। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় রাসেল সরকারের বাবা বাবুল সরকার পাঁচ জনকে আসামী করে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। কিন্তু মামলার একমাস পেরিয়ে গেলেও আসামী ধরা ছোয়ার বাইরে থাকায় তাদের মধ্যে চরম হতাশা কাজ করছে।

বেলকুচিতে রাসেল হত্যার একমাস পেরিয়ে গেলেও আটক হয়নি আসামী
বেলকুচিতে রাসেল হত্যার একমাস পেরিয়ে গেলেও আটক হয়নি আসামী

মামলা সূত্রে জানা যায়, নিহত রাসেলের ছোট ভাই মাসুদ রানাকে চাকরি দেওয়ার জন্য মতিনকে ৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু মতিন চাকুরির ব্যবস্থা না করে অনেকদিন ধরে পলাতক থাকে। রাসেলের পাওনা টাকা না দেওয়ার টালবাহানা করতে থাকে। পরে মতিনকে অতিরিক্ত চাপ দেওয়া হলে রাসেলকে ঢাকায় আসতে বলে। পরে মতিনের কথা বিশ্বাস করে রাসেল একাই ঢাকায় চলে আসে। তিনদিন একটা রুমে রাসেল ও মতিন মিলে থাকে এবং মতিনের লোক টাকা নিয়ে আসবে বলে অপেক্ষা করতে থাকে।

ঘটনার দিন সকালে রাসেল ঘুমন্ত অবস্থায় মতিন চাকু দিয়ে তার মাথায় কুপিয়ে আঘাত করলে রাসেল ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে রাসেলের খালু শহিদুল সকাল ৬টার দিকে রুমে ঢুকতে গেলে তাকেও আঘাত করে পালিয়ে যায় মতিন। পরে আশুলিয়া থানার পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে জন্য ঢাকা সোহরায়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় আহত শহিদুলকে উদ্ধার করে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ব্যাপারে নিহত রাসেলের বাবা বাবলু সরকার বলেন, ছেলে রাসেলের সাথে মতিনের বন্ধত্বপুর্ণ সর্ম্পক ছিলো। মতিন প্রায়ই রাসেলের সাথে আমাদের বাসায় আসতো। সে একটি বিশ্বস্তপূর্ণ ভালো সর্ম্পক গড়ে তোলে। তার নাকি উপর লেভেলে অনেক অনেক বড় বড় লোক আছে চাকরি দেয়ার জন্য। এই সুযোগে আমার ছোট ছেলেকে সরকারি চাকরির লোভ দেখিয়ে প্রায় ছয় লাখের বেশি টাকা নেয়। কিন্তু প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও সে কোনো চাকরি দিতে পারে না। মতিনের কাছ থেকে পাওনা টাকা চাইতে গেলে সে আজ না কাল পরশু করে অনেকদিন যাবত ঘুরায়। তাকে টাকার জন্য অতিরিক্ত চাপ দিলে সে রাসেলকে ঢাকা আসতে বলে। তার কথা মতো রাসেল ঢাকা গেলে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।

এ বিষয়ে নিহত রাসেলের ছোট ভাই মাসুদ বলেন, আমার ভাইকে যারা হত্যা করেছে এ পর্যন্ত কোনো আসামীকে গ্রেফতার করা হয়নি। কিন্তু কি কারণে আসলে আসামী গ্রেফতার হচ্ছে না সেটা কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই। এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের ফাঁসি চাই ।

এ বিষয়ে বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: জাকেরিয়া হোসেন বলেন, এ হত্যাকাণ্ড যেহেতু ঢাকার আশুলিয়া থানায় হয়েছে, মামলাও হয়েছে সেই থানায়। আশুলিয়া থানা থেকে এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কিছু কাগজপত্র আমাদের কাছে এসেছে। আমরা সেগুলো তদন্ত করছি। তার বিষয়ে অতিদ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *