সোমবার, জুলাই ২৮

বাঙ্গি চাষে বিপাকে কৃষকরা 

|| ড. মোঃ গোলাম মোস্তফা | সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি ||

তুলনামূলক কম খরচে রসুনের সাথি ফসল হিসেবে বাঙ্গি চাষ জনপ্রিয় ও লাভজনক। ফলে চলনবিলের রায়গঞ্জ,তাড়াশ ও গুরুদাসপুরে কৃষকরা অন্তত ২০ বছর ধরে বাঙ্গি চাষ করছেন। এ বছর চাহিদা কম ও ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় হতাশ তারা। জমি থেকে সংগ্রহ ও পরিবহন খরচ না ওঠায় মাঠেই পচে নষ্ট হচ্ছে অনেক কৃষকের বাঙ্গি।

কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চাহিদা থাকা এবং লাভজনক হওয়ায় আগ্রহ নিয়ে বাঙ্গি চাষ করেছিলেন তারা। হঠাৎ এ বছর ক্রেতা শূন্যতা ও দরপতনে উৎপাদিত বাঙ্গি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। শ্রমিক মজুরি ও পরিবহন খরচ না ওঠায় এ ফল সংগ্রহে আগ্রহ কমে যাচ্ছে কৃষকের। ফলে ক্ষেত্রেই নষ্ট হচ্ছে অধিকাংশ বাঙ্গি।

পোয়ালশুড়া দক্ষিণ পাড়ার কৃষক আব্দুল ওয়াহাব জানান,  তিনি এ বছর ২ বিঘা জমিতে বাঙ্গি চাষ করেছেন। সমপরিমাণ জমিতে গত বছর ৮০ হাজার টাকা বিক্রি হলেও এ বছর বিক্রি করেছেন মাত্র ১৮ হাজার টাকা। বাজারে ক্রেতা না থাকায় অনেক সময় বাঙ্গির স্তূপ ফেলেই বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকার অন্তত কুড়িজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা অধিকাংশই বর্গা চাষি। প্রতি বিঘা জমির লিজ ৩০ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা। লিজমূল্য, চাষ, বীজ, সার, সেচ, শ্রমিক ও মজুরি মিলিয়ে প্রতি বিঘা রসুন চাষে খরচ লাখের কাছাকাছি। রসুনের সাথি ফসল বাঙ্গি চাষে খরচের প্রায় অর্ধেক টাকা উঠে আসতো। কিন্তু এ বছর দাম না থাকায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের কাছে প্রণোদনা ও সুদমুক্ত কৃষি ঋণের দাবি তাদের। 

স্থানীয় আড়তদার শাহীন বলেন, এখান থেকে ৭০ থেকে ৮০ ট্রাক বাঙ্গি দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হয়। গত বছর প্রতিটি বাঙ্গির পাইকারি দাম ছিল ২০ থেকে ৩৫ টাকা। কিন্তু এ বছর চাহিদা না থাকায় সেই বাঙ্গি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১২ টাকায়। ক্রেতা চাহিদা না থাকায় কম দামে কিনেও বিক্রি হচ্ছে না। এতে পঁচে নষ্ট হচ্ছে বাঙ্গি। পুজি হারাচ্ছেন পাইকাররা।

গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন, গুরুদাসপুরের সুমিষ্ট রসালো বাঙ্গির খ্যাতি সুনাম দেশজুড়ে। এবছর ৮৫০ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি চাষ হয়েছে। অনুকুল আবহাওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে। কিছুটা দরপতন হলেও চাষিদের খুব ক্ষতি হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *