মঙ্গলবার, জুলাই ২৯

বন্যাকবলিতদের সাহায্য করা মানবিক ও ঈমানী দায়িত্ব

প্রতিবছরই বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলাতে বন্যা একটি সাধারণ দুর্যোগ হিসেবে দেখা দেয়। বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজন বাসস্থান, খাদ্য, পানীয় এবং চিকিৎসার মতো মৌলিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত হয়। এ অবস্থায় সমাজের সচ্ছল ও সমর্থবান মানুষের দায়িত্ব হলো এই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। কুরআন ও হাদীসের আলোকে মানবতার এ দায়িত্ব পালনের গুরুত্ব ও ফযীলত সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।

কুরআনের আলোকে বন্যার্ত মানুষের সাহায্য
আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন:

“তোমরা সৎকর্মে পরস্পরকে সাহায্য কর এবং পাপ ও সীমালঙ্ঘনে একে অপরকে সহায়তা করো না।” (সূরা মায়েদা, আয়াত: ২)

এ আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা পরিষ্কারভাবে নির্দেশ দিয়েছেন যে, সৎকর্মে পরস্পরকে সাহায্য করা উচিত। বন্যার্ত মানুষের সাহায্য করা নিঃসন্দেহে একটি মহৎ সৎকর্ম, যা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

“যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের পার্থিব দুঃখ-কষ্ট দূর করবে, আল্লাহ তা’আলা কিয়ামতের দিন তার দুঃখ-কষ্ট দূর করবেন।” (মুসলিম, হাদীস: ২৬৯৯)

এ হাদীসের মাধ্যমে বোঝা যায়, মানুষের কষ্ট লাঘব করা ইসলামের দৃষ্টিতে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাই বন্যার মতো দুর্যোগে আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো, তাদের খাদ্য, বস্ত্র ও চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ করা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন:

“যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের প্রয়োজন মেটাবে, আল্লাহ তা’আলা তার প্রয়োজন মেটাবেন।” (বুখারি ও মুসলিম)

এখানে বুঝানো হয়েছে, আল্লাহর রাসূল (সা.) মানবতার কল্যাণে কাজ করতে উৎসাহ দিয়েছেন এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, যারা অন্যের সহায়তায় এগিয়ে আসে, আল্লাহ তাদের প্রয়োজনও পূর্ণ করেন।

বন্যা বা অন্য যেকোনো দুর্যোগে আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো ইসলামের দৃষ্টিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ফযীলতপূর্ণ একটি কাজ। এটি শুধু সামাজিক দায়িত্ব নয়, বরং আল্লাহর নৈকট্য লাভেরও বড় মাধ্যম। কুরআন ও হাদীসের নির্দেশনাকে ধারণ করে আমাদের উচিত বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের কষ্ট লাঘব করা, যাতে আমাদের সমাজে শান্তি, ভালোবাসা ও মানবতা প্রতিষ্ঠিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *