বৃহস্পতিবার, জুলাই ৩১

বকশীগঞ্জে সাংবাদিক সংগঠনের অতিরিক্ততা ও কপি পেস্ট সাংবাদিকতার কারণে নেটিজেনদের ক্ষোভ

|| আহম্মেদ সায়েম | নিজস্ব প্রতিবেদক ||

জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলায় সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিক সংগঠনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এক ধরণের অস্বস্তি ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। একই সময়ে, অনলাইন পোর্টালগুলোতে নিউজ কপি পেস্ট করে প্রকাশের প্রবণতা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, যা নেটিজেনদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই উপজেলায় প্রায় প্রতিটি গণমাধ্যমের নিজস্ব একটি করে সাংবাদিক সংগঠন গড়ে উঠেছে। এদের মধ্যে অনেকেই সঠিক সাংবাদিকতার চর্চার পরিবর্তে, একে অপরের সংবাদ কপি করে বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে প্রকাশ করছে। এক্ষেত্রে খবরের সঠিকতা যাচাই বা মৌলিক তথ্য সংগ্রহের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। এ কারণে একই সংবাদ বারবার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে দেখা যাচ্ছে, যা সাধারণ পাঠক ও নেটিজেনদের বিরক্ত করছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কয়েকজন স্থানীয় নেটিজেন তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। একজন নেটিজেন লিখেছেন, “বকশীগঞ্জে এত সাংবাদিক সংগঠন কেন, যদি সঠিক সংবাদ পরিবেশন না করা হয়? একই নিউজ বারবার কপি পেস্ট করলে পাঠকের আসল সংবাদ পাওয়ার উপায় থাকে না।” আরেকজন মন্তব্য করেছেন, “সংবাদপত্রের পেশাদারিত্ব ধ্বংস হচ্ছে। সঠিক ও স্বচ্ছ সাংবাদিকতা না থাকলে সংবাদমাধ্যমের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যাবে।”

এ বিষয়ে স্থানীয় সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ এ ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেও, অনেকে এটাকে “প্রতিযোগিতা” হিসেবে দেখছেন এবং সাংবাদিকতার মান উন্নয়নের আহ্বান জানাচ্ছেন। স্থানীয় এক সাংবাদিক বলেন, “আমাদের উচিত মৌলিক সংবাদ সংগ্রহের দিকে নজর দেওয়া এবং পাঠকের আস্থা ফিরিয়ে আনা।”

বকশীগঞ্জের সাংবাদিক সংগঠনগুলোর দ্রুত বৃদ্ধি এবং কপি পেস্ট সাংবাদিকতার এ প্রবণতা যদি বন্ধ না হয়, তবে এর নেতিবাচক প্রভাব শুধু স্থানীয় পর্যায়ে নয়, বরং বৃহত্তর সংবাদ মাধ্যমের প্রতি মানুষের আস্থার ওপরও পড়বে। নেটিজেনরা সাংবাদিকদের কাছ থেকে পেশাদারিত্ব এবং সঠিক সংবাদ পরিবেশনের দাবি জানিয়েছেন, যাতে বকশীগঞ্জের সংবাদমাধ্যমগুলো আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে পারে।

বকশীগঞ্জে সাংবাদিকতার মান উন্নয়নে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের আরও বেশি সচেতন হওয়া দরকার। মৌলিক সংবাদ সংগ্রহ এবং পেশাদারিত্ব বজায় রেখে কাজ করলে সাংবাদিকতার প্রতি নেটিজেনদের আস্থা পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *