সোমবার, জুন ১৬

প্রেসিডেন্সী ইউনিভার্সিটির সিএসই শিক্ষার্থীদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং

|| নিজস্ব প্রতিবেদক ||

প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) ডিপার্টমেন্টের উদ্যোগে ফাইনাল ইয়ারের একদল শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষকবৃন্দের নেতৃত্বে সম্প্রতি (২৪ মে শনিবার) খ্যাতনামা এডুকেশন সফটওয়্যার কোম্পানি পিপিলিকা সফ্‌ট পরিদর্শন করেন। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পেশাদার কর্মপরিবেশ সম্পর্কে গভীর ধারণা লাভ করেছেন এবং প্রযুক্তির বাজারে ইন্টার্নশিপ ও চাকরির সুযোগ সম্পর্কেও অবহিত হয়েছেন। এছাড়াও গ্র্যাজুয়েশনের পূর্ব পর্যন্ত নিজেদেরকে কিভাবে মার্কেট-রেডি হিসাবে গড়ে তুলবেন সেবিষয়ে চমৎকার গাইডলাইন পেয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের সাথে পরিদর্শনে ছিলেন সিএসই বিভাগের হেড প্রফেসর ড. শহিদুল ইসলাম খান। এছাড়াও ছিলেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ মিনহাজুল আলম। পিপিলিকা সফ্‌ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভ্যর্থনার মধ্য দিয়ে পরিদর্শনটি শুরু হয়। এরপর একের পর এক ইন্টারঅ্যাকটিভ ও তথ্যবহুল সেশন অনুষ্ঠিত হয়। যেগুলি পরিচালনা করেন পিপিলিকা সফ্‌টের সিইও ইঞ্জিনিয়ার হুমায়ন কবির পাভেল ও তার অভিজ্ঞ সহকর্মীবৃন্দ।

সেশনগুলোর মাধ্যমে সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীরা সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের পরিবেশ, যোগদানের চ্যালেঞ্জ এবং প্রিপারেশনের স্ট্রাটেজিগুলো জানতে পারেন। উপস্থিত শিক্ষার্থীদের পার্সোনাল ইন্টারেস্ট অনুযায়ী তাদের ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং করা হয়। এছাড়াও ফ্রেশ গ্রাজুয়েটরা কিভাবে এফেক্টিভ সিভি তৈরি করবেন, সে সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয়। সবশেষে, শিক্ষার্থীরা তাদের গ্র্যাজুয়েশনের পর কিভাবে একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পারবেন এব্যাপারে দিকনির্দেশনা লাভ করেন।

এই ধরনের সেশন শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে যদি শ্রেণীকক্ষে পাঠদানকৃত বিষয়গুলোকে ইন্ডাস্ট্রির বাস্তবতার সাথে সন্নিবেশ করা যায়, তাহলে শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মজীবনে ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে। সিএসই বিভাগের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। আলোচনায় উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল- পেশাদারিত্ব, অভিযোজনক্ষমতা এবং দক্ষতা উন্নয়নের গুরুত্ব ও পদ্ধতি।

এই ইন্ডাস্ট্রি-ভিজিট শিক্ষার্থীদেরকে বাস্তব বিশ্বের চ্যালেঞ্জ এবং সেগুলোর মোকাবিলায় একটি প্রাকটিক্যাল ধারণা প্রদান করেছে। আলোচনার শেষে পিপিলিকা সফ্‌ট কর্তৃপক্ষ আগামীতে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন কাটিং-এজ টেকনোলজির উপরে ওয়ার্কশপ এবং ট্রেনিং সেশন আয়োজনের আগ্রহ প্রকাশ করেন। ট্রেনিং এর ফলাফলের উপরে ভিত্তি করে ছাত্র-ছাত্রীদের ইন্টার্নশীপ ও চাকরির সুযোগ করে দিতেও তাদের আগ্রহর বিষয়টি ব্যক্ত করেন।

প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির সিএসই বিভাগের হেড এবং ইউনিভার্সিটির কোয়ালিটি অ্যাস্যুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) ডিরেক্টর প্রফেসর ড. শহিদুল ইসলাম খান নাঈম পিপিলিকা সফ্‌ট কর্তৃপক্ষকে তাদের আন্তরিক আতিথেয়তার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, উন্নতবিশ্বের দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও ইন্ডাস্ট্রি এবং একাডেমির সম্পর্ক যত গভীর ও শক্তিশালী হবে ততই উভয়পক্ষ উপকৃত হবেন-সর্বোপরি বাংলাদেশ উপকৃত হবে। আজকে দেখা যায় যে একজন শিক্ষার্থী গ্রাজুয়েশনের পরে যখন ইন্ডাস্ট্রিতে যান তাকে আবার কয়েকমাস ট্রেনিং নিতে হয়। ফলে কোম্পানিগুলোর এবং শিক্ষার্থীদের মূল্যবান কর্মঘন্টা নষ্ট হয়। আইটি ইন্ডাস্ট্রির সহযোগিতা নিয়ে ইউনিভার্সিটিগুলোর সিলেবাস যত বেশি ইন্ডাস্ট্রি-ওরিয়েন্টেড করা যাবে, ততই শিক্ষার্থীরা ইন্ডাস্ট্রি-রেডি হিসেবে পড়ালেখা শেষ করতে পারবেন এবং উভয়পক্ষ অর্থাৎ শিক্ষার্থী এবং তাদের নিয়োগদাতা কর্তৃপক্ষ উপকৃত হবেন। ভবিষ্যতেও নিয়মিত এধরনের উদ্যোগের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিশিল্পে সফল ক্যারিয়ার গঠনের সুযোগ করে দেওয়া প্রেসিডেন্সি ইউনিভারসিটির সিএসই বিভাগের অন্যতম লক্ষ্য বলেও তিনি জানান।

উল্লেক্ষ্য, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির সিএসই ডিপার্টমেন্ট অত্যন্ত সুনামের সাথে বিএসসি ইন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা প্রদান করে যাচ্ছে । ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ আবুল খায়ের গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় অনেকগুলি উন্নতমানের এবং অত্যাধুনিক ল্যাব সেটাপ করা হয়েছে, যেমন ইনভেশন ল্যাব, এডভান্স রিসার্চ ল্যাব, মাইক্রোপ্রসেসর এন্ড ইন্টারফেসিং ল্যাব, ইলেক্ট্রনিক্স ল্যাব, ডিজিটাল ইলেক্ট্রনিক্স ল্যাব, কমিউনিকেশন ল্যাব ইত্যাদি। এগুলোর মাধ্যমে থিউরিটিক্যাল পড়ালেখার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা প্র্যাকটিক্যাল বিষয়েও যুগোপযোগী জ্ঞান লাভ করছেন। এই মুহূর্তে সাত শতাধিক শিক্ষার্থী প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির সিএসই ডিপার্টমেন্টে লেখাপড়া করছেন যাদের মাঝে অনেকেই এসএসসি ও এইচএসসি তে জিপিএ ৫ ও গোল্ডেন এ প্লাসপ্রাপ্ত। তাদের পাঠদানের জন্য দেশ বিদেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করা ত্রিশের অধিক ফুলটাইম ও পার্ট টাইম ফ্যাকাল্টি কর্মরত আছেন। গত এক বছরে ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর চাকরি ও ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *