বৃহস্পতিবার, জুলাই ২৪

পোশাকশিল্পে নানা চ্যালেঞ্জ, কারখানা বন্ধের ঝুঁকি: বিটিএমএ সভাপতি

|| নিউজ ডেস্ক ||

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেছেন, বস্ত্র খাতে নানা সমস্যার মধ্যে গ্যাসের মূল্য দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে, বিদ্যুতের মূল্য বেড়েছে, ডলারের সংকট, টাকার অবমূল্যায়নের কারণে ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের ঘাটতি, ব্যাংক সুদের হার ৯% থেকে ১৫-১৬% পর্যন্ত বৃদ্ধি এবং রপ্তানির বিপরীতে নগদ প্রণোদনা অস্বাভাবিক কমে গেছে।

এসব সমস্যা ছাড়াও প্রতিবেশী দেশসহ অন্যান্য দেশ থেকে কোনোরকম ডিউটি পরিশোধ ছাড়া অবাধে সুতা আমদানি করা হচ্ছে। ফলে দেশি বস্ত্র শিল্পের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে এবং মিলগুলো অচিরেই বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে। গতকাল রবিবার (১৩ জুলাই) বিটিএমএ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিটিএমএ’র সভাপতি বলেন, গত ৭ জুলাইয়ের সভায় অতিদ্রুত তুলা এবং ফাইবার আমদানিতে আরোপিত ২% এআইটি শুল্ক প্রত্যাহারের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হলেও এখনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় পার্শ্ববর্তী দেশের সুতা উৎপাদনকারী ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছেন। পৃথিবীর কোনো দেশেই ইন্টারমিডিয়ারি শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে সাধারণত কোনো ধরনের কর আরোপ করা হয় না। তিনি বলেন, দেশীয় টেক্সটাইল মিলে উৎপাদিত কটন সুতা ও কৃত্রিম আঁশ এবং অন্যান্য আঁশের সংমিশ্রণে তৈরি সুতার কাপড় দেশের নিম্ন শ্রেণি ও সাধারণ জনগোষ্ঠী ব্যবহার করেন।

কাপড়ের মূল্য বৃদ্ধিতে তারা দেশীয় কাপড় ব্যবহারে নিরুৎসাহিত হবেন। কটন সুতা ও কৃত্রিম আঁশ এবং অন্যান্য আঁশের সংমিশ্রণে তৈরি সুতার ওপর সুনির্দিষ্ট কর কেজি প্রতি ৫ টাকা অবিলম্বে অব্যাহতি প্রদান না করলে স্থানীয় টেক্সটাইল শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো ক্রমান্বয়ে রুগ্ণ শিল্পে পরিণত হবে। তাছাড়া ব্যাংক, বিমা ইত্যাদি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও সংকটে পড়বে।

শওকত আজিজ রাসেল বলেন, বিটিএমএ প্রাইমারি টেক্সটাইল সেক্টরের সর্ববৃহৎ সংগঠন। এর সদস্য সংখ্যা ১৮৫৮। এর মধ্যে স্পিনিং, উইভিং এবং ডাইং-প্রিন্টিং-ফিনিশিং মিল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা বেসরকারি খাতে একক বিনিয়োগ হিসেবে সর্বাধিক। তৈরি পোশাকসহ টেক্সটাইল এবং অ্যাপারেল খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ ৭৫ বিলিয়ন ডলার এবং সরকারের যথাযথ সহযোগিতা পেলে রপ্তানি আয় ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার করা সম্ভব। বিটিএমএ জানায়, বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের শিল্পকারখানায় তীব্র জ্বালানি সংকট, শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি ও বৈশ্বিক বিভিন্ন সংকটজনিত কারণে উৎপাদন খরচ ক্ষেত্রবিশেষে ১৫%-২০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।

গ্যাস বা জ্বালানি সংকটের কারণে উৎপাদনক্ষমতা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। এতে দেশীয় টেক্সটাইল মিলগুলো বিশেষ করে স্পিনিং সেক্টর মারাত্মক সংকটে পড়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *