শনিবার, আগস্ট ২৩

পরিবেশের সচেতনতায় লোহাগাড়া চুনতিতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ও আলোচনা সভা

|| স্টাফ রিপোর্টার (চট্টগ্রাম) ||

বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতিতে অনুষ্ঠিত হলো একটি সার্থক ও প্রাণবন্ত বৃক্ষরোপণ ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি।

শুক্রবার (২৭ জুন) সকালে চুনতি মেহেরুন্নিছা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)’, ‘ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশ’ এবং ‘গর্জন সমাজ কল্যাণ সংস্থা’-র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে পরিবেশ রক্ষায় গাছের গুরুত্ব এবং প্লাস্টিক বর্জ্যের বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই বিদ্যালয়ের ছাত্র ইমতিয়াজ উদ্দিনের কন্ঠে কোরআন তেলাওয়াত এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব সৈয়দ আবুল মাবুদ’র সভাপতিত্বে ‘চুনতি রক্ষায় আমরা’র সমন্বয়ক সানজিদা রহমান’র সঞ্চালনায প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইনামুল হাসান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বন সংরক্ষক ড. মোল্যা রেজাউল করিম, লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জনাব মো: আরিফুর রহমান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব রাশেদুল হক, নার্সারি মালিক সমিতির সভাপতি হামিদুর রহমান, পরিবেশকর্মী রাহিক রাহি, এহতেশামুল হক রোমেল, জাওয়াদ বিন আরিফ, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য বশির উদ্দিন ফারুকী এবং গর্জন সমাজ কল্যাণ সংস্থার প্রতিনিধি ও সহ সাধারণ সম্পাদক ফারজানা ঊর্মি।

অনুষ্ঠানে বক্তারা গাছের পরিবেশগত গুরুত্ব, প্লাস্টিক বর্জ্যের প্রভাব ও সচেতনতা বৃদ্ধির গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাঁর বক্তব্যে বলেন, “সমঅধিকার ও বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণে নারী শিক্ষার পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা অপরিসীম। প্লাস্টিক দূষণ রোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।”

বন সংরক্ষক ড. মোল্যা রেজাউল করিম বলেন, “চট্টগ্রামের গর্জন গাছ আমাদের ঐতিহ্যের অংশ। চুনতি বনাঞ্চল বাংলাদেশের অন্যতম মডেল বন হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে, অথচ এখানকার কিছু মানুষই এই বন ধ্বংসে জড়িত। আমাদের সচেতনতা এবং প্রতিরোধই পারে পরিবেশ রক্ষা করতে।”

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্যে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, “ইভটিজিং কিংবা যেকোনো অন্যায় দেখলে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করুন। আইন সবসময় আপনাদের পাশে আছে।”

উপস্থিত বক্তারা গাছ লাগানো এবং তার পরিচর্যার গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসস্থান ও এলাকা সবুজায়নে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল এক হাজার চারা গাছ বিতরণ কর্মসূচি, যা শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয়। এই গাছগুলোর পরিচর্যা পর্যবেক্ষণের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং আগামী ছয় মাস পর সেরা দশ শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হবে বলে জানানো হয়।

অনুষ্ঠানের শেষাংশে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অতিথিদের অংশগ্রহণে বৃক্ষরোপণ করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে চারা গাছ বিতরণের মাধ্যমে কর্মসূচির পরিসমাপ্তি ঘটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *