
|| কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ||
কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার গাগলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭.০০ ঘটিকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে নেওয়াশী ও সন্তোষপুর ইউনিয়ন বিএনপির যৌথ উদ্যোগে এক বিশাল গণসংযোগ ও মতবিনিময় সভা। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী, বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটির প্রতিনিধি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে মাঠটি পরিণত হয় জনসমুদ্রে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির সদস্য মো. নুরুল আমিন সিদ্দিকী, এবং সঞ্চালনা করেন উপজেলা বিএনপির সদস্য মাহফুজার রহমান আপেল।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সদস্য ও তরুণ সংগঠক ডা. ইউনুছ।
প্রধান বক্তা ছিলেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব শফিউল আলম শফি।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলহাজ্ব মোখলেছুর রহমান, পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ওমর ফারুক, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক দুদু, নাজির হোসেন, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ হোসেন আপেল, উপজেলা বিএনপির সদস্য মো. জাহিদুল ইসলাম খান, ইব্রাহিম আলী, জাহাঙ্গীর বাদশা টুটুলসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
ডা. ইউনুছের বক্তব্য: ‘জনগণের পাশে থেকে রাজনীতি করতে চাই’
প্রধান অতিথি ডা. ইউনুছ তাঁর বক্তব্যে বলেন,
“রাজনীতি মানে ক্ষমতার লড়াই নয়, রাজনীতি মানে জনগণের পাশে থাকা। আমি যেদিন জনগণের আস্থা হারাবো, সেদিন রাজনীতি করা ছেড়ে দেবো। আমরা চাই নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারীর প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের মানুষ যেনো উন্নয়ন ও ন্যায়ের সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়।”
তিনি আরও বলেন,
“বিএনপি জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে সংগ্রাম করছে। দেশের প্রতিটি মানুষ এখন পরিবর্তন চায়। আমাদের এই গণসংযোগের উদ্দেশ্য—সেই পরিবর্তনের বার্তা পৌঁছে দেওয়া।”
শফিউল আলম শফির বক্তব্য: ‘দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ’
প্রধান বক্তা আলহাজ্ব শফিউল আলম শফি বলেন, “বিএনপি আজ গণমানুষের দল। নেতাকর্মীদের মধ্যে ঐক্য ও সততা বজায় রাখতে পারলেই আসন্ন আন্দোলন সফল হবে। ইউনিয়ন পর্যায়ে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।”
তিনি উপস্থিত তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেন,
“রাজনীতিতে তরুণদের অংশগ্রহণ বাড়লে দল প্রাণ ফিরে পায়। আমরা চাই নতুন প্রজন্ম এগিয়ে আসুক।”
স্থানীয় নেতাদের বক্তব্যে উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের বার্তা।উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলহাজ্ব মোখলেছুর রহমান বলেন, “চরাঞ্চলের মানুষের দুর্দশা শুধু সরকারি ব্যর্থতার ফল নয়, এটা গণতন্ত্রহীনতার ফল। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করলেই এই অবস্থা বদলাবে।”
ওমর ফারুক তার বক্তব্যে বলেন, কৃষক যেমন ফসলের হার বৃদ্ধির জন্য নতুন নতুন ফসল ও উন্নত বীজ বপন করেন তেমনি নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে উত্তর ধরলার রাজনীতির মাঠ উর্বর হয়ে উঠবে বিশ্বাস করি।
আশরাফ হোসেন আপেল তাদের বক্তব্যে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে কাজ করার আহ্বান জানান।
জাহিদুল ইসলাম খান বলেন, “বিএনপির রাজনীতি এখন জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে। গ্রামেগঞ্জে মানুষ আবার বিএনপির পতাকা দেখতে চায়।”
সভা শেষে নেতাকর্মীরা আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতি ও দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। “গণতন্ত্র মুক্তি পাক”, “খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই”, “তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ বিএনপি” — এমন স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে গাগলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ।
নেওয়াশী ও সন্তোষপুর ইউনিয়ন বিএনপির এই যৌথ গণসংযোগ ও মতবিনিময় সভা শুধু রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়—এটি ছিল দলের ভেতরে নতুন উদ্দীপনা জাগানোর এক উদ্যোগ। স্থানীয় পর্যায়ে জনগণের সম্পৃক্ততা ও নেতৃত্বের ঐক্য যে বিএনপির ভবিষ্যৎ আন্দোলনে বড় ভূমিকা রাখবে, সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের বক্তব্যে তাও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।