
|| কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি ||
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের সাতকুড়ার পাড় এলাকায় ব্যক্তিগত সম্পত্তির উপর নির্মিত গরুর খামার ও ফলজ বাগান কেটে জোরপূর্বক রাস্তা তৈরির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আজ বুধবার (২৫ জুন) নাগেশ্বরী থানায় স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও বহিরাগতদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের করা হয়।
ঘটনাটি গত ২১ জুন (শনিবার) সংঘটিত হলেও প্রশাসনের নীরব ভূমিকার সুযোগে এটি ধামাচাপা পড়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী মোঃ রফিকুল ইসলাম (৪৫), পিতা- মোঃ আব্দুল কুদ্দুস মিয়া, অভিযোগ করে জানান, তার বসতবাড়ির পিছনের আঙ্গিনায় ও পুকুর পাড় এর দীর্ঘদিন ধরে গড়ে তোলা দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ফলজ গাছের বাগান, সুপারি গাছ এবং একটি গরুর খামার ছিল। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং বহিরাগত সন্ত্রাসীরা তার এসব স্থাপনা কেটে নষ্ট করে জোরপূর্বক চলাচলের রাস্তা নির্মাণ করেন।
এই ঘটনার নেতৃত্ব দেন—১। মোঃ তোজাম্মেল হক ওরফে বাচ্চু (৫৫), ২। মোঃ মাহাবুবুর রহমান (৩৩), ৩। মোঃ আনোয়ার হোসেন (৩০), ৪। মোঃ আব্দুল মজিদ (৪৪), ৫। মোঃ এনামুল হক (১৯), ৬। মোঃ মিন্টু মিয়া (৩৫), ৭। মোঃ মফিজুল ইসলাম (৩৮), ৮। মোঃ মজনু মিয়া (৩০)—সহ আরও বেশ কয়েকজন অজ্ঞাতনামা বহিরাগত।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উক্ত এলাকার বাসিন্দাদের চলাচলের জন্য দীর্ঘ ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে একটি পুরাতন রাস্তা ব্যবহৃত হয়ে আসছিল যা মোঃ রফিকুল ইসলাম ও মোঃ আঃ মান্নানের বাড়ির মাঝ দিয়ে ছিল। কিন্তু সম্প্রতি ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে আঃ মান্নান ওই রাস্তা বন্ধ করে দিলে কেউ কিছু বলতে সাহস না করে, সমাজের নির্ভরযোগ্য ও শান্তিপ্রিয় ব্যক্তি রফিকুল ইসলামকে টার্গেট করে তার সম্পত্তির উপরেই বিকল্প রাস্তা তৈরি করা হয়।
ভুক্তভোগী জানান, তিনি ঘটনার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সহায়তা কামনা করেন। ইউএনও বিষয়টি তদন্তে উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোঃ কাফিকে দায়িত্ব দেন। কিন্তু প্রভাবশালী মহলের বাধার কারণে কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ সম্ভব হয়নি বলে জানা গেছে।
এরপরও অভিযুক্তরা প্রশাসনের নিষেধ অমান্য করে সরাসরি রফিকুল ইসলামের গরুর খামার ও বাগান কেটে রাস্তা নির্মাণ করে। এতে প্রায় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে দাবি করেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে মোঃ রফিকুল ইসলাম ২৫ জুন নাগেশ্বরী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রেজাউল করিম রেজা বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এর আগেও উচ্ছৃঙ্খলতা ও হুমকির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। প্রশাসনের সুস্পষ্ট নির্দেশনা ও কঠোর আইনি পদক্ষেপ ছাড়া এ ধরনের ঘটনা বন্ধ হবে না বলেও মনে করছেন সচেতন এলাকাবাসী।