বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ২৫

নাগেশ্বরীতে ইউএনও’র নিষেধ উপেক্ষা করে ফসলি জমিতে মাটি কাটছে দুলু চক্র ‎

|| মোঃ রফিকুল ইসলাম | নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি ||

‎নাগেশ্বরী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের মধুরহাইল্লা (ধনিটারী) মহল্লার পতিত আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল আজিজ কমিশনারের ছোট ভাই আব্দুল হাকিমের দুই ফসলি জমিতে ভাড়াটে ভেকু মালিক দুলু মিয়া ‘বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন’ অমান্য করে মাটি কাটার বিরুদ্ধে স্থানীয়রা ইউএনওকে অভিযোগ করেন।

অভিযোগের ভিত্তিতে ১১ ডিসেম্বর দুপুর ১২টায় নাগেশ্বরী পৌর তহশিলদার রাজন সাহেব বিধি মোতাবেক ভেকু বন্ধ করেন। কিন্তু ভেকু মালিক দুলু মিয়া রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপটে পুনরায় ভেকু দিয়ে মাটি কাটছেন। এতে উর্বরতা হারাচ্ছে ফসলী জমি এবং বটতলা রুয়ারপাড় থেকে মধুরহাইল্লা এলজিইডির নতুন পাকা রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

স্থানীয়রা বলছেন, ভাড়াটে ভেকু মালিক দুলু মিয়া নাগেশ্বরী উপজেলা প্রশাসনকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে অবাধে ফসলী জমির মাটি কাটছেন।

‎নাগেশ্বরী পৌরসভার প্রান্তিক চাষিরা বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবেলা করে জমিতে দুইবার ফসল চাষ করে পরিবারের মুখে হাসি ফোটান। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, নাগেশ্বরী উপজেলার মাটি উর্বর, এঁটেল দোআঁশ প্রকৃতির। এ মাটিতে পানি নিষ্কাশন কম হয় বলে অল্প সেচেই ভালো ফসল ফলে। ধান, পাট, আখ, ভুট্টা ও শাকসবজি এই অঞ্চলের প্রধান ফসল ফলান কৃষকরা।

‎নাগেশ্বরী পৌরসভার মধুরহাইল্লা গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আরিফ হোসেন, জুয়েল রানা, মফিজুল হক জানান, গত ২দিন থেকে পৌর ৩নং ওয়ার্ডের মধুরহাইল্লা (ধনিটারী) মহল্লার সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক কমিশনার আব্দুল আজিজের ছোট ভাই আব্দুল হাকিমের দুই ফসলী জমিতে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটছেন ভারাটে ভেকু মালিক দুলু মিয়া এবং তিনি মাটি বিক্রি করছেন। ফলে নষ্ট হচ্ছে দুই ফসলি জমি।

এদিকে নতুন পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মাটি ব্যবসায়ী চক্র দুলু মিয়া কৃষকদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে ৩হাজার টাকায় ১হাজার মাটি কিনে নিয়ে ইট ভাটাতে ১হাজার মাটি ৮হাজার থেকে ১০হাজার টাকা বিক্রি করছেন। এতে তারা লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফসলি জমি।

‎ভাড়াটে ভেকু মালিক দুলু মিয়া জানান, যে সব জমি থেকে মাটি কাটা হচ্ছে, সে সব জমির কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। জমির মালিকরা স্বেচ্ছায় মাটি বিক্রি করছেন। স্থানীয় এক সাংবাদিকের মাধ্যমে দু-একদিনের মধ্যে আপনার সঙ্গে কথা হবে।

‎নাগেশ্বরী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বদরুজ্জামান রিশাদ বলেন, আমাদের নজরে পড়লে বা কেউ জানালে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে ভেকু চালু হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

‎কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক অন্নপূর্ণা দেবনাথ বলেন, বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অমান্য করে ফসলি জমির মাটি কাটার বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করা হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *