
|| মোঃ আছিবুল ইসলাম | বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি ||
গত ১১ মার্চ রোজ মঙ্গলবার ঢাকা শহরে অনুষ্ঠিত শাহবাগীদের ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রায় পুলিশের বাধা এবং পরবর্তী সংঘর্ষের ঘটনায় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত ছবিগুলোর প্রতি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মনোযোগ আকৃষ্ট হয়েছে। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মতে, কিছু সংবাদমাধ্যম ঘটনাটির প্রকৃত চিত্র উপস্থাপন না করে একপাক্ষিকভাবে সংবাদ পরিবেশন করেছে, যার ফলে জনগণের মধ্যে পুলিশের ব্যাপারে ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে।
১২ মার্চ রোজ বুধবার বাংলাদেশ পুলিশের অফিসিয়াল ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজ থেকে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে যে, ‘মঙ্গলবার বিকালে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ নামের একটি প্ল্যাটফর্মের প্রায় ৬০-৭০ জনের একটি দল রাজধানীর যমুনা এলাকায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে পদযাত্রার উদ্দেশ্যে এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু পুলিশ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তাদের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে বাধা দেয়। এরপর বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের শান্তিপূর্ণভাবে নিবৃত্ত করার জন্য একাধিকবার অনুরোধ জানায়। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে অবজ্ঞা করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। এসময় পুলিশ নিজেদের আত্মরক্ষা করতে বাধ্য হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এতে সহকারী কমিশনারসহ পাঁচজন পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হন।’
প্রসঙ্গত, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিগুলোতে একপাক্ষিকভাবে শুধুমাত্র পুলিশি কার্যক্রম তুলে ধরা হয়েছে, যা সঠিকভাবে ঘটনার মূল চিত্র তুলে ধরে না। প্রকাশিত ছবিগুলোর মাধ্যমে পুলিশকে ভুলভাবে চিত্রিত করা হয়েছে, যা সেসব গণমাধ্যমের দায়িত্বহীনতার পরিচায়ক। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত উক্ত ঘটনার ভিডিও চিত্রে স্পষ্টভাবে দেখা যায় যে, উত্তেজিত মিছিলকারীরা প্রথমে পুলিশের ওপর আক্রমণ করেছিল, তারপর পুলিশ তাদের প্রতিরোধ করে। কিন্তু প্রকাশিত ছবিতে এই মূল বিষয়টি আড়াল করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে অন্যান্য গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরা জানান, গণমাধ্যমের দায়িত্ব শুধুমাত্র খবর প্রচার করা নয়, বরং তথ্যের সঠিকতা নিশ্চিত করা এবং সমাজে শান্তি, নিরাপত্তা ও ন্যায্যতা বজায় রাখা। গণমাধ্যমকে অবশ্যই স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং সঠিক তথ্য প্রদান করতে হবে, যাতে জনগণ সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং সমাজে বিশৃঙ্খলা না হয়। সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা সমাজের আয়না। তারা জনগণকে সঠিক তথ্য প্রদান করে, যাতে তারা তাদের অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে পারে। এই কারণে, গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে কোনো ভুল প্রচারণা চালানো বা পক্ষপাতিত্ব করা একেবারে অগ্রহণযোগ্য। এতে শুধু সরকারের বা পুলিশের ক্ষতি হবে না, বরং জনগণেরও ক্ষতি হবে, যেহেতু তারা ভুল তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে। গণমাধ্যমের উচিত সঠিক এবং ভারসাম্যপূর্ণ তথ্য প্রদান, যাতে সমাজে শান্তি বজায় থাকে এবং মানুষ সঠিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’
পরিশেষে উক্ত বিবৃতিতে পুলিশ প্রশাসন জানান, প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করে একপেশে সংবাদ ও খন্ডিত ছবি প্রকাশ করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এমন আচরণ গণমাধ্যমের নিরপেক্ষতার প্রতি আঘাত হানে। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের পক্ষ থেকে সব সময়ই এটি প্রত্যাশিত যে, গণমাধ্যমগুলি দায়িত্বশীলতার সাথে তাদের রিপোর্টিং করবে এবং প্রকৃত ঘটনা সঠিকভাবে তুলে ধরবে।