
|| আন্তর্জাতিক ডেস্ক ||
তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার অদূরে এক মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় লিবিয়ার সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মেদ আলি আহমেদ আল-হাদ্দাদসহ মোট আটজন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। খবর: আল জাজিরার।
তুরস্ক সফর শেষে দেশে ফেরার পথে মোহাম্মেদ আল-হাদ্দাদকে বহনকারী একটি ব্যক্তিগত বিমান বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনায় বিমানে থাকা সেনাপ্রধান, চারজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা এবং তিনজন ক্রু সদস্যের সবাই প্রাণ হারিয়েছেন।
দুর্ঘটনার বিবরণ
তুরস্কের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ দবেইবা এই মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে:
- উড্ডয়ন: বিমানটি (ডাসল্ট ফ্যালকন ৫০) মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ৮:১০ মিনিটে আঙ্কারার এসেনবোয়া বিমানবন্দর থেকে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে।
- যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন: উড্ডয়নের প্রায় ৪২ মিনিট পর (রাত ৮:৫২ মিনিটে) রাডার থেকে বিমানটি নিখোঁজ হয়ে যায়।
- জরুরি সংকেত: দুর্ঘটনার ঠিক আগে পাইলট বিমানে বৈদ্যুতিক ত্রুটির (Electrical Failure) কথা জানিয়ে জরুরি অবতরণের অনুমতি চেয়েছিলেন।
- ঘটনাস্থল: আঙ্কারা থেকে প্রায় ৭৪ কিলোমিটার দূরে হায়মানা জেলার কেসিককাভাক গ্রামের কাছে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা আকাশে আগুনের গোলা ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনার কথা জানিয়েছেন।
নিহতদের পরিচয়
লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী এই ঘটনাকে ‘জাতীয় শোক ও বড় ধরনের ক্ষতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন:
- লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মেদ আলি আহমেদ আল-হাদ্দাদ (লিবিয়ার সেনাপ্রধান)।
- মেজর জেনারেল আল-ফিতৌরি ঘারিবিল (স্থলবাহিনীর প্রধান)।
- ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহমুদ আল-কাতাউই (সামরিক উৎপাদন কর্তৃপক্ষের পরিচালক)।
- মুহাম্মদ আল-আসাউই দিয়াব (সেনাপ্রধানের উপদেষ্টা)।
- মুহাম্মদ ওমর আহমেদ মাহজুব (সামরিক আলোকচিত্রী)।
- এছাড়া বিমানে থাকা তিনজন ফরাসি ক্রু সদস্যও নিহত হয়েছেন।
বর্তমান পরিস্থিতি ও তদন্ত
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলি ইয়েরলিকায়া জানিয়েছেন, তুর্কি উদ্ধারকারী দল ও নিরাপত্তা বাহিনী ইতিমধ্যে ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করেছে।
- প্রাথমিক তদন্ত: তুর্কি কর্মকর্তাদের মতে, এখন পর্যন্ত কোনো অন্তর্ঘাত বা নাশকতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রাথমিক তদন্তে ‘কারিগরি ত্রুটি’কেই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
- শোক ঘোষণা: লিবিয়ার জাতিসংঘ স্বীকৃত সরকার এই ঘটনায় তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল আল-হাদ্দাদ ২০২০ সাল থেকে লিবিয়ার সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন এবং লিবিয়ার বিভক্ত সামরিক বাহিনীকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রচেষ্টায় তার বড় ভূমিকা ছিল।
