রবিবার, জুলাই ২৭

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্রী সংস্থার আত্মপ্রকাশ

|| জলিলুর রহমান | ঢাবি প্রতিনিধি ||

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্র শিবির প্রকাশ্যে আসার পর এবার আত্মপ্রকাশ করেছে ইসলামী ছাত্রী সংস্থা।

এর আগে, কোন নারী সদস্য না থাকায় শিবিরের কমিটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হলে তারা জানান যে, নারী শিক্ষাথীদের আলাদা প্লাটর্ম আছে। যা পরবর্তীতে তারা নিজেরাই আত্মপ্রকাশ করবে।

অবশেষে নানা জল্পনা কল্পনা শেষে বুধবার (২৮ মে ) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সাথে সাক্ষাৎ করে নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে স্বারকলিপি জমা দেওয়ার মাধ্যামে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে তারা।

স্বারকলিপি জমা দেওয়ার সময় ঢাবি শাখা ছাত্রী সংস্থার সভানেত্রী, সেক্রেটারিসহ মোট সাতজন উপস্থিত ছিলেন। প্রথামিকভাবে সংগঠনটির সভানেত্রী ও সেক্রেটারির পরিচায় জানা গেছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা কিছুদিনের মধ্যেই প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির সভানেত্রী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রী সংস্থার সভানেত্রীর নাম সাবিকুন্নাহার তামান্না। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং কবি সুফিয়া কামাল হলের আবাসিক ছাত্রী।

এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রী সংস্থার সেক্রেটারির নাম মোছা: আফসানা আক্তার। তিনি ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের আবাসিক ছাত্রী।

স্বারকলিপি জমা দেওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভানেত্রী সাবিকুন্নাহার তামান্না বলেন, স্বৈরাচার সরকারের আমলে নির্যাতন নি‌পীড়‌নের কার‌ণে দীর্ঘ‌দিন ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। যদিও আমরা আমাদের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম বিভিন্নভাবে সক্রিয় রেখেছিলাম। গত বছরের ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে কেন্দ্রীয় নি‌র্দেশনার আ‌লো‌কে ক‌্যাম্পা‌সে আমরা কাজ শুরু করার চেষ্টা করেছি। আলহামদুলিল্লাহ, এই সময়ের মা‌ঝে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী সংস্থার প্রাথমিক কাঠামো গঠন সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে শাখা সভানেত্রী ও সেক্রেটারির দায়িত্ব প্রদানের মাধ্যমে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইনশাআল্লাহ, আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম চালু করবো।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি আফসানা আক্তার বলেন, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রী সংস্থা বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও বৃহৎ ছাত্রী সংগঠন। ১৯৭৮ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আমাদের সংগঠন ছাত্রীদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্রী সংস্থার কার্যক্রমের রয়েছে বিরাট ইতিহাস। অতী‌তে ছাত্রী সংস্থা ডাকসুতেও অংশগ্রহণ করে‌ছে। দীর্ঘদিন ধরে আমরা শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের জন্য কাজ করেছি।

তিনি আরও বলেন, বিগত ফ্যা‌সিস্ট সরকা‌রের আমলে আমরা সবচেয়ে বড় ভিক্টিম ছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ আজকের এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা নতুন পরিসরে কাজ শুরু করেছি। আমরা আশা করছি, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ও সম্মানজনক পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে ঢাবি প্রাশাসন দ্রুততম সময়ের মা‌ঝে কার্যকরী ব্যবস্থা নেবেন ইনশাআল্লাহ। নারী শিক্ষার্থীদের অধিকার ও কল্যাণের জন্য বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্থা অতীতে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছে। সামনের দিনগু‌লো‌তেও নারীদের ন্যায্য দাবি ও অধিকার আদায়ে এই ভূমিকা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।

উল্লেখ্য যে, গত ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পালাবদলের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠনটির প্রকাশ্যে কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্থাটির অবস্থান প্রকাশ করা হয়েছে বলে তারা নিজেরাই জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *