সোমবার, নভেম্বর ২৫

ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে ব্র্যাক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সেমিস্টার ফি বন্ধ ও ক্লাস বর্জনের হুশিঁয়ারি

২দফা দাবিতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষার্থীরা। দাবি না মানলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার ফি বন্ধ ও ক্লাস বর্জনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে আন্দোলনকারীরা।

আজ মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে দুপুর ১২টার দিকে ‘ব্রাক ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস কমিউনিটি’ মানববন্ধনের আয়োজন করে। সেখান থেকে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ২দফা দাবি তুলে ধরে।

দাবি দুটি হলো ব্র্যাক শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে কেন চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তার বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্য এবং ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পষ্ট অবস্থান কী তা বিবৃতির মাধ্যমে জানানো।

এ দাবিতে আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে অবস্থান করে। এ বিষয়ে প্রশাসন যদি কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার ফি বন্ধ ও ক্লাস বর্জনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে আন্দোলনকারীরা।

এর আগে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যসূচিতে ট্রান্সজেন্ডার ইস্যু অন্তর্ভুক্ত ও নতুন শিক্ষাক্রমের ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে সমালোচনা করে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলোসফির খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব। এরপর তাকে চাকরিচ্যুত করে ব্র্যাক প্রশাসন। যা মারাত্বক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

মানববন্ধনে প্রতিবাদকারীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে। প্ল্যাকার্ডে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবি উল্লেখ করেন, ‘শরিফ থেকে শরিফা মানিনা মানবো না’, ‘আমাদের এই বাংলায় ট্রান্সজেন্ডারের ঠাঁই নেই’ ‘ট্রান্সজেন্ডার আর হিজড়া এক না, এক না’, ‘নো টু এলজিবিটিকিউ’, ‘তোমার আমার বাংলায় ট্রান্সজেন্ডারের ঠাঁই নেই’, ‘নো টু রেইবো টেরোরিস্ট’, ‘ডাচ ব্র্যাক সাপোর্ট এলজিবিটিকিউ ? উই ব্র্যাকিয়ানস ডোনট সাপোর্ট এলজিবিটিকিউ‘. উই ডো নোট প্রমোট এলজিবিটিকিউ‘, ‘সমকামিতার বিরুদ্ধে লড়াই করবো একসাথে‘ ‘আমার সোনার বাংলায় ট্রান্সজেন্ডারের ঠাঁই নেই‘ এসময় বিভিন্ন স্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী একজন শিক্ষার্থী বলেন, আসিফ মাহতাব স্যারের সাথে বৈষম্য করা হয়েছে। আন প্রফেশনালিজম দেখিয়েছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। বিশ্ববিদ্যালয়কে বলতে চাই, বাংলাদেশে এলজিবিটিকিউ হোক আর ট্রান্সজেন্ডার হোক কোনো কিছুর ঠাঁই নেই। ট্রান্সজেন্ডার সকল ধর্মের কাছে অবৈধ, বাংলাদেশের আইন অনুয়ায়ী এটা বৈধ না। যারা এটা বৈধতার জন্য কাজ করবে তাদের বিরুদ্ধেও আমরা লড়াই করবো। বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ এর বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

অন্য আরেক শিক্ষার্থী বলেন, যারা স্বাধীনতার নাম দিয়ে মানবতাকে ধ্বংস করার জন্য কাজ করছে তারা দেশ ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কাজ করছে। ব্র্যাক বাংলাদেশের গ্রাম পর্যন্ত সমকামিতা ছড়িয়ে দিচ্ছে।

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এটা মানসিক অসুস্থতা । ট্রান্সজেন্ডার এবং হিজড়া এক জিনিস নয়।

এর আগে গত শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক : বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দিতে গিয়ে ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ক গল্প পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদ জানান শিক্ষক আসিফ মাহতাব।

তিনি বলেন, সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে ট্রান্সজেন্ডারের গল্প ঢুকিয়ে শিক্ষার্থীদের মগজধোলাই করা হচ্ছে। এ সময় তিনি সবার সামনে ওই পাঠ্যবই থেকে ‘শরীফ থেকে শরীফা’ গল্পের পাতা ছিঁড়ে ফেলেন।

এ শিক্ষককে ব্র্যাক থেকে চাকরিচ্যুতের খবর প্রকাশের পর থেকে শুরু হয় সমালোচনা। এর মধ্যে বিবৃতি দিয়েছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে তারা বলেছে, চাকরি হারানো খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎসের সঙ্গে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির কোনো চুক্তি নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *