
|| কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ||
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার জয়মনিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মজিবর রহমান ও নৈশপ্রহরী আফছার উদ্দিনের বিরুদ্ধে অনৈতিক ও অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থীর অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগে জানা যায়, দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোছাঃ আকলিমা খাতুন আখি (১০) গত ১০ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ে খেলাধুলার সময় পায়ে আঘাত পেয়ে ব্যথায় কাতরাচ্ছিল। তখন বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক বা স্টাফ তার খোঁজ নেননি। খবর পেয়ে তার মা নাছিমা বেগম বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখেন, মেয়ে বেঞ্চে শুয়ে কষ্ট পাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সহকারী শিক্ষক মজিবর রহমানের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং শিশুটিকে বিদ্যালয় থেকে সরিয়ে নিতে বলেন। একপর্যায়ে হুমকিও দেন। এসময় নৈশপ্রহরী আফছার উদ্দিনও শিক্ষকের পক্ষ নিয়ে অভিভাবককে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন।
নাছিমা বেগম অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, এর আগেও উক্ত শিক্ষক সরকারি আইন অমান্য করে তার মেয়েকে বেত্রাঘাত করে জখম করেছিলেন। এছাড়া বিদ্যালয় প্রাঙ্গণকে রাতের বেলায় নেশাখোরদের আড্ডাখানায় পরিণত করার অভিযোগও রয়েছে। তিনি অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানান।
আরেক অভিভাবক সুজন মিয়া বলেন, “মজিবর রহমানের খারাপ আচরণ ও নানা অপকর্মের কারণে বাধ্য হয়ে আমার কন্যাকে বিদ্যালয় থেকে সরিয়ে মাদ্রাসায় ভর্তি করেছি।” এলাকাবাসীর দাবি, শিক্ষক মজিবর রহমান রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এতদিন নানা অনিয়ম করলেও কেউ মুখ খোলার সাহস পাননি।
প্রধান শিক্ষক তার আত্মীয় হওয়ায় অভিযোগ সত্ত্বেও তিনি প্রায় সময় বিদ্যালয়ে হাজিরা দিয়ে অনুপস্থিত থাকেন এবং নিষিদ্ধ দলীয় কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আখতারুল ইসলাম জানান, “অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত তদন্ত করে সত্যতা প্রমাণিত হলে বিভাগীয় আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ঘটনার পর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।