শুক্রবার, নভেম্বর ১৪

গুলিবর্ষণে নিহত মাদ্রাসা শিক্ষক ইমদাদুলের দাফন সম্পন্ন, খুলনায় বিরাজ করছে আতঙ্ক

|| শেখ শাহরিয়ার | জেলা প্রতিনিধি (খুলনা) ||

খুলনার খানজাহান আলী থানার যোগিপোল ইউনিয়নে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত মাদ্রাসা শিক্ষক মো. ইমদাদুল হকের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার আছর নামাজের পর খুলনা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ মাঠে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় বিএনপির মহানগর ও থানা পর্যায়ের নেতাকর্মী, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন। পরে মরদেহ যশোরের মনিরামপুরে নিজ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

গত রবিবার রাত ৯টার দিকে কুয়েট রোডের আইটিগেট এলাকায় ইউনিয়ন বিএনপি কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। ওই সময় যোগিপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মো. মামুন শেখসহ কয়েকজন নেতা স্থানীয় মাদ্রাসা শিক্ষক ইমদাদুল হককে নিয়ে বৈঠক করছিলেন। এ সময় দুটি মোটরসাইকেলে করে আসা ৩-৪ জন অজ্ঞাত সন্ত্রাসী অফিসে দুটি বোমা নিক্ষেপ করে গুলি ছোড়ে। ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তেলিগাতী নূরানী হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মো. ইমদাদুল হক (৫৫)। গুরুতর আহত হন ইউপি সদস্য মামুন শেখ (৪৫), মিজানুর রহমান (৪৮) ও বিল্লাল হোসেন (৩৫)। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহতরা বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি এবং কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।

এ ঘটনায় সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় খানজাহান আলী থানা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাড. এস এম শফিকুল আলম মনা। তিনি বলেন,

“খুলনা এখন আতঙ্কের নগরীতে পরিণত হয়েছে। ঘরে-বাইরে কেউ নিরাপদ নই। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও সন্ত্রাসী হামলায় মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। প্রশাসনের ব্যর্থতায় খুনিরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।”

তিনি আরও বলেন, “যোগিপোল ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ইউপি সদস্য মামুনের ওপর হামলার ঘটনায় মাদ্রাসা শিক্ষক নিহত এবং বিএনপি নেতারা আহত হয়েছেন। হামলাকারীরা যে দলেরই হোক, যত শক্তিশালী হোক না কেন, তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে, নইলে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে খুলনাকে অচল করে দেওয়া হবে।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন খানজাহান আলী থানা বিএনপির সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান এবং পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাস। বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা চৌধুরী শফিকুল ইসলাম, শেখ আব্দুস সালাম, শেখ আলমগীর হোসেন, মীর শওকত হোসেন হিট্টু, জাহাঙ্গীর হোসেন খোকা, কাজী শহিদুল ইসলাম, ইকবাল হোসেন মিজানসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।

নেতারা দাবি করেন, সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে খুলনায় শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনা হোক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *