সোমবার, আগস্ট ২৫

গাজীপুর বিএনপি নেতা সাথীর বহিষ্কার ঘিরে তৃণমূলে হতাশা

|| গাজীপুর প্রতিনিধি ||

গত ৬ জুলাই বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাইফুল ইসলাম টিপুর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গাজীপুর মহানগর বিএনপির চার নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃতদের মধ্যে অন্যতম হলেন টঙ্গী পূর্ব থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম সাথী। বহিষ্কার ও পরবর্তীতে তার গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে গাজীপুরে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও হতাশা বিরাজ করছে।

সিরাজুল ইসলাম সাথী ছাত্রজীবন থেকেই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০০৩ সালে তিনি ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি অবিভক্ত টঙ্গী থানা ছাত্রদলের যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি পদপ্রার্থী ছিলেন তবে বিপত্তি ঘটে বয়সের সমীকরণে। পরবর্তীতে ছাত্ররাজনীতি শেষে যুক্ত হন স্বেচ্ছাসেবক দলে এবং একপর্যায়ে নেতৃত্বদেন গাজীপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। বর্তমানে তিনি টঙ্গী পূর্ব থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবি, সিরাজুল ইসলাম সাথীর বিরুদ্ধে কখনও চাঁদাবাজি বা সহিংসতার অভিযোগ পাওয়া যায়নি তার দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে । বিএনপির কঠিন সময়েও তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় থেকেছেন, কারাবরণ করেছেন, ২৩ টি মামলা মাথায় নিয়ে হামলা-মামলার মুখে পড়েছেন। কিন্তু রাজনীতির স্বস্তির সময়ে তিনি দলের অভ্যন্তরীণ গ্রুপিংয়ের শিকার হয়েছেন বলে তৃণমূল মনে করে।

বহিষ্কারের দুই দিন পরে গ্রেপ্তার হন সাথী। তৃণমূলের অভিযোগ চাঁদাবাজির অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হলে তাকে চাঁদাবাজির কোন মামলায় পুলিশ গ্রেফতার দেখাতে ব্যার্থ হয়ে পুলিশ তাকে স্যাটার্ন গার্মেন্টসের ঝুট নিয়ে সংঘর্ষের মামলায় অজ্ঞাতনামা দিয়ে তাকে গ্রেফতার দেখান, জানাগেছ তার সঙ্গে সাথীর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তারা বলছেন, এটি একটি মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা। গ্রেপ্তারের পর থেকেই গাজীপুরে একপ্রকার নিঃশব্দ প্রতিবাদ চলছে—কোনো মিছিল মিটিং নয়, বরং ফেসবুক প্রোফাইলে সাথীর ছবি যুক্ত করে তৃণমূল নেতাকর্মীরা তাদের নিরব প্রতিবাদ ব্যাক্ত করেছেন ।

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সিনিয়র নেতারা মনে করছেন, সিরাজুল ইসলাম সাথীর মতো ত্যাগী নেতাদের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেয়ার আগে দলের উচিত ছিল কাউনসেলিং বা অন্তত আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া। তারা বলেন, “যারা যৌবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় দলকে দিয়েছে, নিপীড়ন সহ্য করেছে—তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে মানবিক বিবেচনা প্রয়োজন।”

তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবি, দলের এই ত্যাগী কর্মীর বহিষ্কার আদেশ দ্রুত প্রত্যাহার করে তাকে পুনরায় দলে সুযোগ দেয়া হোক। তারা বলেন, “সাথীরা দল করেছেন স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে, আজ তাদের প্রতি এমন আচরণ হতাশাজনক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *