গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে হামাসের সাথে ভয়াবহ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মধ্যেই গাজা শহরকে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলার দাবি করছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। যে কোনো সময় গাজায় চূড়ান্ত অভিযান চালাতে পারে তারা। এদিকে ফিলিস্তিনি সংস্থা হামাস কঠোর হুশিয়ারী দিয়ে বলেছে, ইসরায়েলের ‘অভিশপ্ত ইতিহাস’ হবে গাজা।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর’২৩) ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র দানিয়েল হাগারি গাজা ঘিরে ফেলার দাবি করে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, হামাসের কেন্দ্র গাজা শহর ঘিরে ফেলার কাজ পুরোপুরি শেষ করেছি আমরা।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, ‘আমরা যুদ্ধের সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছি। আমরা বেশ ভালো সাফল্য পেয়েছি এবং গাজার উপকণ্ঠ পার করে ভেতরে প্রবেশ করেছি। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ’ এজন্য সাধারণ ফিলিস্তিনিদের গাজার উত্তর দিক থেকে দক্ষিণ দিকে সরে যেতে সতর্ক করেছেন তিনি।
নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘আমি বেসামরিক নাগরিকদের বলছি। আপনারা সরে যান। দক্ষিণ দিকে চলে যান। কারণ হামাসকে দমনের অভিযানে আমরা থামব না। ’
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরা বলছে, শুক্রবার ভোর থেকেই গাজায় ব্যাপক বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর’২৩) এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গাজা শহর বর্তমানে ইসরায়েলের আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েল সেখানে হামাসের কমান্ড কাঠামোকে ধ্বংস করার অঙ্গীকার করেছে এবং বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ভূখণ্ডের দক্ষিণ অংশে সরে যেতে বলেছে।
গাজার এক বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেছেন, গাজা শহরকে কেন্দ্র করে বিরতিহীন বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। তাদের স্থল সেনারা গাজায় ঢোকার চেষ্টা করছে। কিন্তু হামাসের তুমুল প্রতিরোধে দখলদাররা এখনও গাজা শহরের ভেতর ঢুকতে পারেনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া যুদ্ধের কয়েকটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হামাসযোদ্ধারা তাদের গোপন সুড়ঙ্গ থেকে বের হয়ে ইসরায়েলি সেনাদের ওপর মর্টার হামলা চালিয়ে আবার দ্রুত সুড়ঙ্গে ঢুকে পড়ছেন।
গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৯ হাজার ৬১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। স্থল আক্রমণের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলের ১৯ সেনা সদস্যও নিহত হয়েছেন।