ফিলিস্তিনে অবরুদ্ধ গাজার রাফাহ নগরীতে ইসরায়েলের হামলায় এক অন্তঃসত্ত্বা মায়ের মৃত্যু হয়েছে। তবে তার পেটের সন্তানকে বাঁচাতে পেরেছেন চিকিৎসকরা। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এ খবর জানিয়েছেন।
শনিবার রাতে রাফাহতে ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলায় ১৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, দুটি বাড়িতে এ হামলা হয়। নিহতদের মধ্যে একটি পরিবারের ১৩ শিশু রয়েছে।
প্রথম বাড়িতে হামলায় শুকরি আহমেদ জাওদা নামের এক যুবক, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সাবরিন আল- সাকানি ও তাদের এক মেয়ে নিহত হন। তবে অস্ত্রোপচার করে নিহত মায়ের পেটে থাকা সন্তানকে বাঁচিয়েছেন রাফাহর কুয়েতি হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
মোহাম্মদ সালামা নামের এক চিকিৎসক শিশুটির দেখভাল করছেন। ১ দশমিক ৪ কেজি ওজনের এই কন্যা শিশুকে জরুরিভাবে অস্ত্রোপচার করে মায়ের পেট থেকে বের করা হয়। তার মা মৃত্যুর সময় ৩০ সপ্তাহের গর্ভবতী ছিলেন।
হাসপাতালে শিশুটিকে অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে একটি ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছে। তার বুকে টেপ লাগিয়ে রাখা হয়েছে। তাতে লেখা, ‘শহীদ সাবরিন আল-সাকানির সন্তান।
শিশুটির চাচা রামি আল-শেখ জানিয়েছেন, হামলায় নিহত হওয়া তার বোন মালাক শিশুটির নাম রাখতে চেয়েছিল রুহ। যার বাংলা অর্থ আত্মা। তিনি বলেন, “পৃথিবীতে বোন আসছে ভেবে খুবই খুশি ছিল মালাক।”
চিকিৎসক বলেছেন, শিশুটি হাসপাতালে তিন থেকে চার সপ্তাহ থাকবে। এরপর শিশুটিকে তার পরিবার, ফুপু, চাচা না দাদা-দাদী, কার কাছে দেওয়া যায় সেটি দেখা হবে। যদিও শিশুটি বেঁচে গেছে। কিন্তু তার জন্ম হয়েছে এতিম অবস্থায়- সেটিই সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয়।
দ্বিতীয় বাড়িতে ইসরায়েলের হামলায় আব্দেল আল আল পরিবারের ১৩ শিশু নিহত হয় বলে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এর সঙ্গে দুই নারীও নিহত হয়েছেন। মোহাম্মদ আল বেহাইরি নামের এক ফিলিস্তিনি বলেছেন, তার মেয়ে এবং নাতি এখনও ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে আছে।
ইসরায়েলের হামলায় উদ্বাস্তু হওয়া গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার বেশিরভাগই রাফাহতে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু গাজার অন্যান্য স্থান ধ্বংসের পর এখন রাফাহতে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী।
গতবছর অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের হিসাবমতে, ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।