রবিবার, নভেম্বর ২

খুলনা প্রেসক্লাবের বরাদ্দ নিয়ে কেসিসি কর্মকর্তার বক্তব্যে সাংবাদিক সমাজের ক্ষোভ

|| শেখ শাহরিয়ার | জেলা প্রতিনিধি (খুলনা) ||

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কর্তৃক খুলনা প্রেসক্লাবের উন্নয়নের জন্য বিশেষ বরাদ্দের বিষয়ে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান কর নির্ধারক শেখ হাফিজুর রহমানের বিষোদগার ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন খুলনা প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ।

সম্প্রতি খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সাধারণ সভায় শেখ হাফিজুর রহমান স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত খুলনা প্রেসক্লাবের উন্নয়নের জন্য প্রদত্ত বরাদ্দের তীব্র বিরোধিতা করেন। তিনি সভায় প্রশাসকের কাছে প্রশ্ন তোলেন, “কেন খুলনা প্রেসক্লাবকে এই বরাদ্দ দেওয়া হবে?”— যা উপস্থিত সদস্যদের বিস্মিত করে তোলে।

খুলনা প্রেসক্লাব নেতারা বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সরাসরি অধীনস্ত সংস্থার একজন কর্মকর্তা হয়ে উপদেষ্টার নির্দেশনার বিরোধিতা করা প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ও পেশাগত নৈতিকতার চরম লঙ্ঘন। তারা বলেন, শেখ হাফিজুর রহমানের এই বক্তব্য ফ্যাসিবাদী মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ এবং একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার কাছ থেকে এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য।

বিবৃতিতে প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ শেখ হাফিজুর রহমানের বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার করার দাবি জানান এবং তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেসিসি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। তারা সতর্ক করে বলেন, যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে খুলনার সাংবাদিক সমাজ কঠোর অবস্থান নিতে বাধ্য হবে।

বিবৃতিদাতারা হলেন খুলনা প্রেসক্লাবের আহবায়ক এনামুল হক, সদস্য সচিব রফিউল ইসলাম টুটুল, কার্যনির্বাহী সদস্য শেখ দিদারুল আলম, মো. মিজানুর রহমান মিলটন, কৌশিক দে, আহমদ মুসা রঞ্জু ও আশরাফুল ইসলাম নূর।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৪ ও ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় খুলনা প্রেসক্লাব ভবনটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরবর্তীতে একই স্থানে একটি বহুতল মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে খুলনা প্রেসক্লাব সরকারে কাছে আবেদন জানায়। আবেদনটি বিবেচনায় নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে প্রেসক্লাবের উন্নয়নের জন্য ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করে।

সরকারি এই বরাদ্দের বিপক্ষে গিয়ে শেখ হাফিজুর রহমানের অবস্থানকে সাংবাদিক মহল প্রশ্নবিদ্ধ হিসেবে দেখছে। তারা জানতে চান, সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে তিনি কিসের স্বার্থে এমন বিরোধিতা করছেন। এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, তিনি অবসর গ্রহণের পরও নিয়মনীতি উপেক্ষা করে অবৈধভাবে কেসিসির দপ্তরে উপস্থিত হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন, যা প্রশাসনিক আচরণের পরিপন্থী এবং রীতিমত বিস্ময়কর।

খুলনা প্রেসক্লাব নেতারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে খুলনা প্রেসক্লাব ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। কোনো ব্যক্তি বিশেষের কারণে সেই সম্পর্ক নষ্ট হতে দেওয়া হবে না। তারা বিষয়টি তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যথাযথ প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *