
||শেখ শাহরিয়ার | জেলা প্রতিনিধি (খুলনা) ||
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের কাশিমনগর এলাকায় শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে এক বিধবার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনার পর উত্তেজিত এলাকাবাসী অভিযুক্ত দেবর মহিদুল গাজীকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে রেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মৃত এনামুল গাজীর দ্বিতীয় স্ত্রী রাশিদা বেগম স্বামীর মৃত্যুর পর দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন। দেবর মহিদুল গাজী দীর্ঘদিন ধরে তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এলাকাবাসীর দাবি, মহিদুল মাদক সেবন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত এবং তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে নিহতের ভাসুর রবিউল গাজী জানান, ভোরে ফজরের নামাজে যাওয়ার সময় লিচু গাছে নড়াচড়া লক্ষ্য করলেও সেটিকে বিড়ালের উপস্থিতি মনে করে গুরুত্ব দেননি। পরে সকালে পরিবারের ফোন পেয়ে ফিরে এসে তিনি ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান।
নিহতের পিতা মোহাম্মদ আলী সরদার বলেন, তার মেয়েকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে এবং এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে। তিনি সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
নিহতের মেয়ে তাছমিরা খাতুন (১৩) জানায়, জমির নামজারি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে রাতে তার মা ও কাকা মহিদুল গাজীর মধ্যে কথা হয়। পরে ভোররাতে বাথরুমে যাওয়ার সময় মহিদুল গাজী একা পেয়ে তার মাকে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে চাপ দেয়। মা রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর করা হয় এবং ঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকিয়ে দেওয়া হয়। চিৎকার করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। সকালে দাদি দরজা খুলে দিলে রান্নার কাঠ আনতে গিয়ে লিচু গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় রাশিদা বেগমের মরদেহ পাওয়া যায়।
নিহতের গোপনাঙ্গ থেকে রক্তক্ষরণ, শরীরে আঘাতের চিহ্ন এবং ঘটনার বর্ণনা ঘিরে এলাকাজুড়ে চরম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের সুরতহাল রিপোর্টের সময় উপস্থিত এক নারী জানান, নিহত রাশিদা বেগমের গোপনাঙ্গ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল এবং শরীরে রক্তের দাগ দেখা যায়।কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ মনিরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
পাইকগাছা থানার ওসি মোঃ গোলাম কিবরিয়া জানান, মহিদুল গাজীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। হত্যা না আত্মহত্যা তা ময়না তদন্তের পর বিস্তারিত জানানো হবে। তবে এ রিপোর্ট লেখার সময় (শনিবার সন্ধ্যা) পর্যন্ত ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়নি।
