
|| শেখ শাহরিয়ার | জেলা প্রতিনিধি (খুলনা) ||
অবশেষে আলোর মুখ দেখতে চলেছে খুলনায় নবনির্মিত জেলা কারাগার। প্রায় ৯৫ শতাংশ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী অক্টোবরের মধ্যে কারাগারটি কারা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর হতে পারে। নতুন কারাগার পরিচালনার জন্য ৬০০ জনবল নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।
১৯১২ সালে নির্মিত বর্তমান পুরোনো কারাগারটির ধারণক্ষমতা ৬৭৮ হলেও এখন বন্দি আছেন দেড় হাজারের বেশি। শতবর্ষী ওই জরাজীর্ণ ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ২০০৪ সালেই চিহ্নিত হয়েছিল। নতুন কারাগার চালু হলে সেখান থেকে বন্দি স্থানান্তর শুরু হবে।
রূপসা বাইপাস সড়কের জয়বাংলা মোড়ের পাশে প্রায় ৩০ একর জমির ওপর নির্মিত নতুন কমপ্লেক্সে ৪ হাজার বন্দির ধারণক্ষমতা থাকলেও আপাতত ২ হাজার বন্দির জন্য অবকাঠামো প্রস্তুত। এখানে বিচারাধীন ও সাজাপ্রাপ্ত বন্দি, নারী, কিশোর ও শ্রেণিপ্রাপ্তদের জন্য পৃথক ব্যারাক রয়েছে। এছাড়া আছে ৫০ শয্যার হাসপাতাল, কারারক্ষীদের সন্তানদের জন্য স্কুল, লাইব্রেরি, মোটিভেশন সেন্টার, ডাইনিং হল, সেলুন, লন্ড্রি, নামাজের ঘর, নারী বন্দিদের জন্য ডে-কেয়ার সেন্টারসহ ৫২টি স্থাপনা।
গণপূর্ত বিভাগ জানায়, প্রধান কাঠামোগত কাজ শেষ হয়েছে। বাকি রয়েছে ফিনিশিং, রং করা এবং ভেতরের কিছু কাজ। কারাগারের ভেতরে ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমানা প্রাচীর, ড্রেনেজ, সৌর বিদ্যুৎ, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও আধুনিক পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
জেল সুপার নাসির উদ্দিন প্রধান বলেন, “হস্তান্তর বিলম্বিত হওয়ায় হতাশা আছে। তবে অক্টোবরের মধ্যে হস্তান্তর হলে ধাপে ধাপে বন্দি স্থানান্তর শুরু হবে।”
বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফুজ্জামান বলেন, “আধুনিক এই কারাগার দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করতে যাচ্ছে। এতে বন্দিদের মানবিক মর্যাদা রক্ষা সম্ভব হবে।”
২০১১ সালে একনেক এ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। প্রাথমিক বাজেট ছিল ১৪৪ কোটি টাকা এবং সময়সীমা ছিল ২০১৬ সাল পর্যন্ত। একাধিকবার সময় বাড়ানো ও বাজেট সংশোধনের পর ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২৮৮ কোটিতে।