শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৬

খুলনায় কুপিয়ে দুই হাত বিচ্ছিন্ন করা যুবকের ঢাকায় মৃত্যু

|| শেখ শাহরিয়ার | জেলা প্রতিনিধি (খুলনা) ||

খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায় সন্ত্রাসীদের নৃশংস হামলায় দুই হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে গুরুতর আহত আক্তার আলী মোল্লা (৩০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

পারিবারিক সূত্র জানায়, আক্তারের মৃত্যুর খবর প্রথমে ফোনে জানান তার বোনের জামাই আসাদুল। বর্তমানে নিহতের স্ত্রী লতা ঢাকায় অবস্থান করছেন। আক্তার একমাত্র কন্যা সন্তানের জনক। তার বড় মেয়ে জুই চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষার্থী।

এ বিষয়ে বটিয়াঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার হাফিজুর রহমানকে বৃহস্পতিবার রাতে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, ‘আক্তারের মৃত্যুর বিষয়টি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে থানায় জানানো হয়নি। তবে হামলার ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। জড়িতদের শনাক্তে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে এবং ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।’

এর আগে মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে বটিয়াঘাটা থানাধীন দারোগারভিটা এলাকায় আক্তার আলী মোল্লার ওপর হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্ত। তিনি খুলনা মহানগরীর গল্লামারি এলাকার বাসিন্দা এবং চাঁদ আলী মোল্লার ছেলে। জীবিকার প্রয়োজনে তিনি নগরীর বড় বাজার এলাকার একটি হোটেলে কাজ করতেন।

আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন সময়ে আক্তার জানান, গল্লামারি সেতু এলাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে তার পরিচিত দুই ব্যক্তি তাকে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকে আরও কয়েকজন অবস্থান করছিল। পরে সংঘবদ্ধভাবে তার ওপর হামলা চালিয়ে তারা পালিয়ে যায়। স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে প্রথমে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় আক্তার দাবি করেন, হামলাকারীরা মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত পূর্বপরিচিত সন্ত্রাসী। মাদকসংক্রান্ত তথ্য তিনি পুলিশকে দিতে পারেন—এমন আশঙ্কা থেকেই তার ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। একটি গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, খুলনার তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবুর অনুসারীরা এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে।

ঘটনার পর থেকে এলাকায় চরম আতঙ্ক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। নিহতের পরিবার দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, হামলার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত আরও জোরদার করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *