
|| আব্দুর রহিম ||
মাদরাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান হলো ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। যা এদেশের আলেম-ওলামাদের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন ছিলো। এই স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিলো মাদরাসা শিক্ষার মান উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়টি যে আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, সেই লক্ষ্যে এখনও পৌঁছাতে পারেনি বলে আমি মনে করি।লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে আরো কিছু পথ পাড়ি দিতে হবে এবং বেশ কিছু কাজ হাতে নিতে হবে। অনেকেই বলছেন বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য কাজ হয়েছে বলে তারা মনে করেন না।যদিও অনেকে দাবি করে থাকেন যে সেশনজট নিরসনে আগের চাইতে অনেকটাই এগিয়েছেন।
একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কর্মকাণ্ড থাকে। কিন্তু যদি এরকম হয় যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হলো শুধু ফাযিল ও কামিলের পরীক্ষা নেওয়া ও সনদ প্রদান করা। তাহলে তা অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার।একটা বিশ্ববিদ্যালয় মানে একটা বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান।যদিও কিছুদিন আগে ভাষা ক্লাব, এমফিল, পিএইচডি কোর্স চালু এবং গবেষণার ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে। যাক একটু দেরিতে হলেও কতৃপক্ষকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এর মাধ্যমে মাদরাসা শিক্ষার উচ্চতর স্তরের শিক্ষকদের গবেষণা করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
আমাদের দেশে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো আরো দুইটা বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। যা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিত।
এই সব বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু পিছিয়ে নেই। যদিও তাদের জন্ম অনেক আগে। তারা নানামুখী কোর্স চালু করেছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত ও প্রফেশনাল অনার্স-মাস্টার্স, এমফিল-পিএইচডি,
বিভিন্ন দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ডিপ্লোমা কোর্স ইত্যাদি রয়েছে। অপর দিকে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তারাতো কোনো কোনো ক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এগিয়ে। বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনিস্টিউট (বিএমটিটিআই) সর্বপ্রথম মাদরাসা শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ব্যাচেলর অব মাদরাসা এডুকেশন (বিএমএড) কোর্স চালু করে।সেই কোর্সটি ব্যাপকভাবে চালু করার কথা ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এই বিশ্ববিদ্যালয়ের তেমন কোনো পদক্ষেপ চোখে পরে না! আমি মনে করি, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই সক্ষমতা রয়েছে। এই কোর্সটি ইআবি চালু করলে মাদরাসার শিক্ষকরা আরো বেশি উপকৃত হইতো।
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় যে কাজগুলো হাতে নিতে পারে :
১. এমফিল ও পিএইচডি কোর্স চালু করা। (চালু হচ্ছে)
২. গবেষণার ক্ষেত্র তৈরি করা এবং গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানো এবং ফাযিল ও কামিল স্তরে বিদ্যমান সকল বৈষম্য দূর করা।
৩. জার্নাল বের করা (চালু হচ্ছে): বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি গবেষণা জার্নাল ও একটি সাধারণ জার্নাল প্রকাশ করা। যেখানে শিক্ষক ও গবেষকদের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীরাও লিখবেন। মাদ্রাসার শিক্ষকদের গবেষণার সুযোগ তৈরি হবে এবং শিক্ষার্থীদেরকে গবেষণা করার উৎসাহ জোগাবে।ফলে নতুন নতুন গবেষক ও তত্ত্ব সৃষ্টি হবে। এর সাথে সাথে যারা প্রভাষক পদে আছে, তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে গবেষণা প্রবন্ধ শর্তারোপ করা যেতে পারে। প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক হতে হলে ১০টি গবেষণা প্রবন্ধ এবং সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক হতে হলে ২০টি গবেষণা প্রবন্ধ বিভিন্ন গবেষণা জার্নালে প্রকাশিত হতে হবে। নতুবা অনেকেই গবেষণায় আগ্রহ প্রকাশ করবে না।
৪. প্রত্যেক ফাযিল ও কামিল মাদ্রাসায় ভাষা ক্লাব (ল্যাংগুয়েজ ক্লাব) চালু করা (চালু হচ্ছে): ক্লাসে যতটুকু সময় পাওয়া যায়, সেই সময়ের মধ্যে ভাষা শেখানো সম্ভব নয়। ক্লাসরুমে ভাষার বিভিন্ন নিয়ম-কানুন শেখানো যায়। ভাষা শেখা ও চর্চা করার জায়গা হলো ল্যাংগুয়েজ ক্লাবগুলো।যদিও সকল ফাযিল ও কামিল মাদরাসা ইআবি’র নির্দেশনা মেনে এখনো অনেক মাদরাসা চালু করেনি।
৫. ব্যাচেলর অব মাদরাসা এডুকেশন (বিএমএড) প্রোগ্রাম চালু করা: মাদ্রাসা শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এই কোর্সটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৬. ইলমুল কিরআত ওয়াত তাজবীদের উপর ১ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স চালু করা: এই কোর্স চালু করার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা সংশোধন করে ইবতেদায়ী ক্বারী ও সহকারী ক্বারী পদে যে শিক্ষক সংকট চলতেছে তা দ্রুত নিরসন করা। এর ফলে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা যে বিশুদ্ধভাবে কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করতে পারে না সেই সমস্যা আশা করি দূর হবে। কারণ নিয়োগ যোগ্যতা মুজাব্বিদ ক্বারী শর্ত থাকায় এই পদে সকল মাদ্রাসায় শূন্য পদ বেশি। কারণ অধিকাংশ মাদ্রাসায় মুজাব্বিদ ক্বারী বিভাগ চালু নেই।
৭. আরবি ভাষা কোর্স চালু করা:
আরবি ভাষা কোর্সের মাধ্যমে মাদরাসা শিক্ষকদের চারটি যোগ্যতা (শুনা, বলা, পড়া এবং লেখার) দক্ষতা বৃদ্ধি করা। যাতে তারা পাঠদান আরবিতে করাতে পারেন।শিক্ষার্থীরা আরবি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করে মিডেলিস্টে (আরব বিশ্বে) ভালো কাজ পেতে পারে সে নিশ্চয়তা প্রদান করা।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা প্রতি ক্লাসে আরবি পড়ছে, লিখছে, তবুও আরবিতে খুব ভালো দক্ষতা অর্জন করতে পারছে না অনেক মাদরাসা শিক্ষার্থী।এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠার জন্য প্রতিটি মাদরাসায় আরবি শিক্ষাকেন্দ্র থাকা দরকার। সেখানে শিক্ষার্থীরা শিখবে, আরবিতে কথা বলবে, লিখবে। তারা আরবি ভাষায় দক্ষ হবে। আর সেই সকল ভাষা ক্লাবের জন্য শিক্ষা উপকরণ (বই, প্রজেক্টর এবং সাউন্ড সিস্টেম ইত্যাদি) পাওয়ার ক্ষেত্রে বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে। ইংরেজি ভাষার জন্য ব্রিটিশ কাউন্সিল আর আরবি ভাষার জন্য বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থ্যট (বিআইআইটি)
Arabic for All [العربية للجميع] এবং King Salman Global Academy For Arabic language [مجمع الملك سلمان العالمي للغة العربية ] ও Saudi Electronic University [الجامعة السعودية الإلكترونية ]এই সকল প্রতিষ্ঠানের সাথে Memorandum of
Understanding[MOU]ভিত্তিতে কাজ করা যেতে পারে।
৮. আধুনিক আরবি ভাষা ইনিস্টিউট/ আরবি অ্যাকাডেমি চালু করা: এর মাধ্যমে আরবি ভাষার নিয়ন্ত্রণ করা যেমন: আরবি শব্দের প্রতিবর্ণায়ন করা, সঠিক ব্যবহার ও উচ্চারণ ইত্যাদি।
মাদরাসা শিক্ষার্থীদের জন্য আরবি ভাষা শিক্ষাকে আরো সহজ ও সাবলীল করতে এবং আরবি ভাষায় পারঙ্গম করে তুলতে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ‘আরবি ভাষা ইনস্টিটিউট’ প্রয়োজন। সৌদি আরবসহ মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলোর সহায়তায় আরবি ভাষা ইনস্টিটিউট স্থাপন করা যেতে পারে ।
এ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা হলে মধ্যপ্রাচ্যে যেসব শ্রমিকরা যান, তারা এখান থেকে আগেই আরবি ভাষার কোর্স করে যেতে পারবেন। এতে তাদের ভালো চাকরি পাওয়া সহজ হবে। যারা আরবিতে দক্ষ হয়ে যাবেন, তাদের সৌদি আরবসহ আরবি ভাষাভাষি দেশে বেশি মূল্যায়ন করা হবে। এতে আমাদের দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে।
৯. মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আইসিটি [ICT] বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলতে আইসিটি কোর্স চালু করা: মাদরাসা শিক্ষকরা কীভাবে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে কুরআন, হাদিস ও ফিকহ, আদব পাঠদান করাতে পারেন সে রকম প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করা ।তারা যাতে ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরি করতে পারেন ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম পরিচালনা করতে সক্ষম হন।
১০. মাদরাসার শিক্ষার্থীদের বেকারত্ব দূর করতে বিভিন্ন ক্যারিয়ার উন্নয়নমূলক এবং স্কিল ডেভেলপমেন্ট কোর্স চালু করা: বিশেষ করে ইসলামী অর্থনীতি, ইসলামি ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং, বিজনেস এন্ড পলিসি অব মিডলইস্ট,ইফতা, ইসলামি আইন এবং ফিকহ্, মধ্য প্রাচ্য ও মুসলিম বিশ্ব, মিডিয়া বা আধুনিক আরবি, জার্নালিজম ও মিডিয়া স্টাডিজ ইত্যাদি বিষয়ে ডিপ্লোমা কোর্স চালু করা। এর সাথে সাথে বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ টিউটর নিয়োগ প্রদান করা।
১১. প্রকাশনা বিভাগ চালু করা: বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পরিপত্র, পরীক্ষার খাতা, উত্তর পত্র, মাসিক প্রতিবেদন, বার্ষিক রিপোর্ট এবং গুরুত্বপূর্ণ আরবি মূল বইগুলো বাংলা ভাষায় অনুবাদ করার জন্য প্রকাশনা বিভাগ চালু করা।
১২. একটা ডায়নামিক ওয়েবসাইট।
১৩. প্রতি বছর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ব্যবস্থা করা।
১৪. শিক্ষার্থীদেরকে মূল সনদ প্রদান করা।
১৫. আবর বিশ্বসহ বহির্বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে স্কলারশিপ পেতে চুক্তি করা। বিভিন্ন গবেষণা প্রজেক্টে Memorandum of
Understanding[MOU]এর ভিত্তিতে কাজ করা যেতে পারে ।
১৬. ঢাকার কেন্দ্রে লিডারশীপ তৈরি করার জন্য অন-ক্যাম্পাস থিওলজিসহ(কুরআন, হাদিস, ফিকহ্, দাওয়াহ, আরবি) বেশ কিছু সাবজেক্টে অনার্স ও মাস্টার্স এবং গবেষণা বিভাগ চালু করা।
১৭. অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালুকৃত মাদ্রাসার জন্য ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সরাসরি শিক্ষক নিয়োগ দেয়া:
আলিয়া মাদরাসা থেকে দাখিল ও আলিম পাশ এবং কাওমি মাদরাসা ও পড়াশোনা করেছেন কিন্তু শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারছেন না এরকম ডক্টরেট করা ও বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। তাদেরকে যেসব মাদ্রাসায় অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালু রয়েছে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সরাসরি নিয়োগ দেয়া।
১৮. প্রভাষক থেকে অধ্যাপক হওয়ার ক্ষেত্রে অনুপাত প্রথা বাতিল করা।
১৯. মাদ্রাসার এমফিল- পিএইচডিও ডিগ্রিধারীদেরকে বিশেষ প্রণদনার ব্যবস্থা করে গবেষণায় উৎসাহিত করা।
২০. গুণী শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান প্রধানদেরকে সম্মাননা প্রদান করা: শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদেরকে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া ব্যবস্থা করা।যাতে তাদেরকে দায়িত্ব পালন উৎসাহিত করা যায়।
২১. মাদ্রাসা শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটা” মাদরাসা শিক্ষা গবেষণা ইনস্টিটিউট” তৈরি করা। যা মাদ্রাসা শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন, শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, পরিমার্জনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
২২. মাসিক রিপোর্ট প্রকাশ করা :
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় সমাচার’ নামে একটি মাসিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা । যাতে মানুষ জানতে পারবে, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কীভাবে কী হচ্ছে।
২৩. শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা :
শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য জেলাশহর গুলোতে প্রশিক্ষণকেন্দ্র করে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। শুধু অংশগ্রহণ আর ভাতা নেয়া নয়, প্রশিক্ষণগুলো যাতে বাস্তবমুখী হয় সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে । শিক্ষকদের দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তুলতে বাংলাদেশ মাদ্রাসা টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (বিএমটিটিআই) বিভাগীয় সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ(টিটিসি) এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থ্যট (বিআইআইটি) এর সহযোগিতা নিয়ে লং কোর্স বা শর্ট কোর্স প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
২৪. আঞ্চলিক কেন্দ্র স্থাপন করা : আটটি বিভাগীয় শহরে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের আঞ্চলিক কেন্দ্র স্থাপন করা। যাতে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম সহজে ও দ্রুত করা যায়।
২৫. অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও পরীক্ষা ভবন স্থাপন করা:
বিশ্বব্যাংক, ইউনিসেফসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাধ্যমিক স্কুল এবং কলেজে বিভিন্ন প্রজেক্টে অর্থসহায়তা দিয়ে থাকে। তবে শর্ত হলো তাদের কিছু পলিসি অনুমোদন দিতে হয় বা পাঠ্যপুস্তকে ইনক্লুড করতে হয়। (যেমন: সহশিক্ষা, জেন্ডার সমতা, ইত্যাদি) মাদ্রাসা যেহেতু ধর্মীয় আদর্শে বিশ্বাসী। তাই তাদের পলিসি অনুমোদন না দিলে তারা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে এটা স্বাভাবিক ।তখন বসে না থেকে আমাদেরকে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে নজর দেওয়া উচিত।বাংলাদেশে ইসলাম ধর্মের প্রচারে মাদ্রাসার আধুনিক ভবন নির্মাণে তাদের থেকে অর্থসহায়তা চাওয়া যেতে পারে।যেমন: ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংক,রাবেতা,বাদশা ফয়সাল ফাউন্ডেশন, ওআইসি ইত্যাদির মাধ্যমে। যেমনভাবে তারা মডেল মসজিদ তৈরিতে সহায়তা করেছিলো।কারণ মসজিদ তৈরির আগে মুসল্লী তৈরি করা দরকার। অধিকাংশ মাদ্রাসার ভবন ও শ্রেণিকক্ষগুলো জরাজীর্ণ যা শিক্ষার্থীদের মনকে আকর্ষণ করে না। আলাদা পরীক্ষা ভবন না থাকায় দেখা যায় যে সকল মাদ্রাসাগুলোতে পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে সে সকল মাদ্রাসাগুলোতে শ্রেণিকার্যক্রম ও পাঠদান ব্যহত হচ্ছে।
ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের ইসলামি শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্মাণ করবে বলে আশা করা যায়। এই বিশ্ববিদ্যালয় দেশের মাদরাসা শিক্ষাকে আধুনিকায়ন ও বিশ্বমানের করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
লেখক: সাবেক শিক্ষার্থী, আরবি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষক, সৈয়দ আব্দুল মান্নান ডি. ডি. এফ আলিম মাদরাসা, বরিশাল।
ইমেইল :hasibur0213@gmail.com