বুধবার, নভেম্বর ২৬

কুড়িগ্রাম–১ আসনে মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে নাগেশ্বরীতে বিক্ষোভ

|| কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ||

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ঘোষিত ২৫, কুড়িগ্রাম–১ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী আলহাজ্ব সাইফুর রহমান রানা’র মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে অদ্য ১৫ নভেম্বর শনিবার বিকেল ৫ টায় নাগেশ্বরীতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আসনটিতে ডা. মো. ইউনুছ আলীকে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে ঘোষণার দাবিতে শনিবার বিকেল ৪টায় নাগেশ্বরী মুক্তমঞ্চ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে পুনরায় মুক্তমঞ্চে এসে শেষ হয়।

পুরো কর্মসূচীতেই বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীদের ঢল নেমে আসে। দলীয় পতাকা, ব্যানার এবং স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো শহর এলাকা। মাঠপর্যায়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে বিক্ষোভটি তাৎপর্যপূর্ণ রাজনৈতিক অবস্থান নির্দেশ করে বলে স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের মত।

মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন—
নাজির হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক, নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপি,আলহাজ্ব আব্দুস সালাম, যুগ্ম আহ্বায়ক, ভুরুঙ্গামারী উপজেলা বিএনপি,ইব্রাহিম আলী, সদস্য, নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপি,মিজানুর রহমান মেম্বার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, কচাকাটা ইউনিয়ন বিএনপি।এছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা মতামত তুলে ধরেন।

বক্তারা বলেন, “ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থী আলহাজ্ব সাইফুর রহমান রানা মাঠে গ্রহণযোগ্যতায় পিছিয়ে আছেন। তাঁর নেতৃত্বে নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে। জনগণের সঙ্গে প্রত্যাশিত যোগাযোগ নেই, তৃণমূলে শক্ত ভিত্তিও তৈরি হয়নি—এমন বাস্তবতায় তাকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে।”

আরও বলা হয়, স্থানীয় পর্যায়ে জরিপ ও গণসংযোগে দেখা গেছে, বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বড় একটি অংশ ডা. মো. ইউনুছ আলীর প্রতি আস্থা রাখেন। তার সততা, পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি, তরুণ নেতৃত্বগুণ ও তৃণমূলের সঙ্গে নিবিড় সম্পৃক্ততা আসনটির জন্য তাকে উপযুক্ত করে তোলে।

সমাবেশে নেতা-কর্মীরা বলেন—
“ডা. মো. ইউনুছ আলী একজন শিক্ষিত, মেধাবী, মার্জিত রুচির ও পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। চিকিৎসা পেশায় দীর্ঘদিন জনগণের সেবায় নিয়োজিত থাকায় তার জনভিত্তি বিস্তৃত। তাকে মনোনয়ন দিলে বিএনপির বিজয়ের সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাবে। জনগণের প্রত্যাশা, তৃণমূলের ইচ্ছা এবং বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাকে চূড়ান্ত প্রার্থী করা উচিত।”

বক্তারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উদ্দেশে বলেন, নির্বাচনের আগে মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা বিবেচনা না করলে আসনটি হারানোর সম্ভাবনা প্রকট হয়ে উঠবে।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন যে ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীর মনোনয়ন তৃণমূলের মতামতকে উপেক্ষা করে দেওয়া হয়েছে। তারা কেন্দ্রের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন—“দলকে বাঁচাতে এবং জনগণের প্রত্যাশা রক্ষা করতে মনোনয়ন প্রশ্নে পুনর্বিবেচনা করা জরুরি।”

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ধরনের সংগঠিত বিক্ষোভ বিএনপির অভ্যন্তরীণ মতপার্থক্যকে স্পষ্ট করছে; পাশাপাশি তৃণমূলে কোন নেতৃত্বের প্রতি আস্থা বেশি, সেটিও পরিষ্কার করে দিচ্ছে।

প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী গণসমাবেশ শেষে আয়োজকরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেন। উল্লেখ্য যে এই কর্মসূচি তে সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রাপ্ত আলহাজ্ব সাইফুর রহমান রানা র সমর্থক রা বিক্ষোভ মিছিলে বাধা প্রদান করলে বিক্ষোভকারী রা বাধা উপেক্ষা করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।এছাড়া পুরো কর্মসূচীতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *