শুক্রবার, জুন ১৩

কুড়িগ্রামের দুধকুমর নদীতে চায়না জালের ভয়াল আগ্রাসন, দেশি মাছ বিলুপ্তির পথে

|| কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি ||

কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার দুধকুমর নদীতে অবাধে ব্যবহার হচ্ছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যবিরোধী চায়না জাল। উপজেলার মুড়িয়া ঘাট, পাচমাথা, মালিয়ানী, ছিট মালিয়ানী ও পাকার মাথা এলাকার নদীপাড়ে প্রতিদিন শতাধিক চায়না জাল বসিয়ে অবৈধভাবে মাছ শিকার চলছে। এর ফলে একদিকে যেমন দেশীয় মাছের প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে হুমকির মুখে পড়েছে নদীর প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য।

স্থানীয়রা জানান, মুড়িয়া এলাকায় প্রতিদিন প্রায় ১০০টিরও বেশি চায়না জাল বসানো হয়। এসব জালে মাছের পোনা পর্যন্ত ধরা পড়ছে, ফলে প্রজনন ঋতুতেও মাছের সংখ্যায় মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে রুই, কাতলা, মৃগেল, পুঁটি, টেংরা, সিলভার কার্পসহ নানা দেশি প্রজাতির মাছ হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রশাসনের চোখের সামনেই এ ধরনের অবৈধ জাল ব্যবহার করে চলেছে একটি প্রভাবশালী চক্র। বারবার অভিযোগ করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ চোখে পড়েনি।

দুধকুমর নদী পাড়ের একজন জেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “চায়না জাল নদীর জন্য বিষের মতো। এতে ছোট পোনাও রেহাই পায় না। আগে যে মাছ আমরা ২-৩ কেজি ধরে আনতাম, এখন তাও পাওয়া যায় না।”

অত্র এলাকার সুধীজন ও সচেতন নাগরিক সমাজের বক্তব্য, এখনই চায়না জালের এই দৌরাত্ম্য বন্ধ না করলে অদূর ভবিষ্যতে দেশীয় মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তারা প্রশাসনের প্রতি দ্রুত অভিযান চালিয়ে এই অবৈধ জাল ধ্বংসের জোর দাবি জানিয়েছেন।

নাগেশ্বরী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার সঙ্গে এ বিষয়ে মুঠোফোনে কথা বলতে চাইলে প্রথমে ফোন বিজি পাওয়া যায়,তারপর পরপর বেশ কয়েকবার ফোন করলেও ফোন না ধরে বন্ধ করে রাখেন। এ বিষয়ে নাগেশ্বরী থানা পুলিশের কর্মকর্তা অপুর্ব কুমার জানান মৎস্য অফিস আমাদের সহযোগিতা চাইলে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে নদীর পরিবেশ রক্ষা এবং দেশের প্রাকৃতিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণের লক্ষ্যে প্রশাসন সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *