
|| মু. হাসান জামান ||
অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে সমন্বয়কদের প্রথম সারীর লিডাররা পুরো বিপ্লবকে হাইজ্যাক করতে চাচ্ছে! তারা যেন স্বৈরাচার সরকারের পতনকে একান্তই নিজস্ব অর্জন মনে করছে। তারা যে নাম দিবে সেটাই নিতে হবে, এমন একটা দাবী যেন। পুরো দেশের জেলা পর্যায়ে, বিভিন্ন ভার্সিটি পর্যায়ে বিশেষত প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি, অতঃপর সমাজের নাগরিক সমাজ, বুদ্ধিজীবী, সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলিমদের প্রতিনিধি আলেম-উলামা, শ্রমিকশ্রেণী ও বিভিন্ন পেশাজীবিদের পরামর্শ নিয়ে নামগুলো প্রস্তাব করা যেত। ইতিমধ্যে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির গ্রুপ থেকে বলা হয়েছে যে, তাদের সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ করা হয়নি। অথচ আন্দোলন যখন সমাপ্ত হচ্ছিল, তখন তাদের রক্ত ত্যাগের মাধ্যমে আবারো আন্দোলন জেগে উঠে।
এই লিডাররা যদি মনে করে মানুষ তাদের কথায় নেমে এসেছিল, তাহলে তা হবে মহাভুল। ১৫ বছর ধরে চলা লেডি ফিরাউনের যুলমের অবসান ঘটাতে মানুষ এই কতিপয় ছাত্র নেতাদের কর্মসূচিতে সারা দেয়। ত্যাগ স্বীকার করে। যদি তারা প্রমাণ চায় তাহলে আবার কর্মসূচি দিক, দেখবে তাদের ডাকে কেউ সাড়া দিবে না। প্রি-প্ল্যানড, ম্যানেজড, অরচেসটেড এই আন্দোলনে আমি শুরু থেকে ছিলাম। শুরু থেকেই আমি বিভিন্ন দলের মানুষকে দেখেছি। শাহবাগে বিএনপি-জামায়াত সহ বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীদের দেখেছি। উনারা জানত আসল দাবী কোনটা। প্রথম থেকে দাবী একটাই ছিল। যা ধাপে ধাপে নিয়ে যাওয়া হলো। প্রথমে স্যার সলিমুল্লাহ পদত্যাগের দাবী তুলেন এমনি এমনি না, তিনিও জানতেন এটা কোথায় যাচ্ছে। পরে আসিফ নজরুল স্যারসহ বাকিরাও এই দাবী তুললো। তারাও জানতেন কোথায় যাচ্ছি। আর তাই ফিরাউনের পতনের সাথে সাথে সবাই বেদখল হওয়া সম্পদ দখলে নিচ্ছে, নেতাকর্মীদের মুক্ত করছে।
আচ্ছা, যদি শুরু থেকে এটা এক দফা ছিল না, তাহলে কিভাবে ১৩ জন সমন্বয়ক বিভিন্ন স্টেক হোল্ডারদের সাথে কথা না বলে ড. ইউনুসের নাম সাজেস্ট করে? অতঃপর পূর্ব নির্ধারিত পুরো নিজস্ব চয়নকৃত ব্যক্তিদের তালিকা করে। অ্যামেরিকার তৈরি গ্রেট গেমে জনগণ রক্ত দিয়েছে, আমেরিকার বা কতিপয় কিছু ব্যক্তির স্বার্থের জন্য নয়। সবার ত্যাগের দাবী একটাই যে, জনমানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন এখানে ঘটে।
আমি এখনো আশাকরি, ফিরাউনকে তাড়িয়ে আমরা কোনো নমরুদ আনবো না। ভারতকে তাড়িয়ে অ্যামেরিকাকে বসাবো না।
লেখক: সমন্বয়ক, বৈষম্যবিরোধী কওমী ছাত্র পরিষদ, রংপুর।