এলজিইডি’র উন্নয়ন প্রকল্প/মাস্টার রোলে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চাকরি আত্মীকরণ/রাজস্বকরণের দাবিতে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। আজ মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টায় রাজধানীর আগারগাঁওস্থ এলজিইডি ভবনের সামনে তাদের এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে।
বৈষম্যের শিকার এলজিইডিতে চাকরিরত আন্দোলনকারীরা জানায়, এলজিইডিতে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও মাস্টার রোলে কর্মরত ৪৩৪৯ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী রাজস্ব খাতে আত্মীকরণের বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্ট ও সুপ্রীম কোর্টের রায় পাওয়ার পরও পদ শূন্য থাকা সত্ত্বেও এলজিইডি’র প্রধান প্রকৌশলী মহোদয়গণ গত ১৩ বছর যাবত তাদের চাকুরী আত্মীকরণ/রাজস্বকরণ করছেন না।
আন্দোলনকারীরা বলছে, আমরা প্রায় ১৮ থেকে ৩০ বছর যাবত এলজিইডিতে সামান্য বেতনে মাস্টার রোল এবং উন্নয়ন প্রকল্পে কর্মরত। আমাদের অধিকাংশ চাকুরী বয়স শেষ পর্যায়ে। এখন শূন্য হাতে এলজিইডি থেকে আমাদের ন্যায্য অধিকার বঞ্চিত হয়ে ফিরে যেতে হবে। ইতিমধ্যে মহামান্য হাইকোর্ট ও সুপ্রীম কোর্টের রায় প্রাপ্ত বেশ কয়েক জন কর্মচারী অর্থকষ্টে ও বিনা চিকিৎসায় মারা গিয়েছেন। আমাদের ছেলে-সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে না পেরে অধিকাংশেরই লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বৈষম্যের স্বীকার কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ কষ্টে জীবন অতিবাহিত করছি।
তারা আরও জানায়, এলজিইডির উন্নয়ন প্রকল্প ও মাস্টাররোলে কর্মরত মোট প্রায় ৭৪৪১ জন কর্মকর্তা কর্মচারীর মধ্যে প্রায় ৩০৯২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ইতিমধ্যে আত্মীকরণ/রাজস্বখাতে স্থানান্তর করা হয়েছে। একই প্রকল্প/মাস্টাররোল কর্মরত এবং মহামান্য হাইকোর্ট ও সুপ্রীম কোর্টের একই রায় প্রাপ্ত অবশিষ্ট প্রায় ৪৩৪৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এখন পর্যন্ত আত্মীকরণ/রাজস্বকরণ হয় নাই। প্রায় ৪৩৪৯ জন কর্মকর্তা কর্মচারী তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে অত্যন্ত মানবেতর দুর্দিন কাটাচ্ছে। মহামান্য হাইকোর্ট ও সুপ্রীম কোর্টের রায়ে পূর্বে যাদের রাজস্বখাতে স্থানান্তর করা হয়েছে তাদের রায় একই। একই রায়ে প্রায় ৩০৯২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে রাজস্ব বাজেটে স্থানান্তর করা গেলে একই রায়ে আত্মীকরণ/রাজস্বকরণ শূন্য পদে আত্মীকরণে বাধা কোথায়? বিগত ১৩ বছরের প্রধান প্রকৌশলী মহোদয়েগণ কোন প্রকার পদক্ষেপ নেননি। আমরা প্রায় ৪৩৪৯ জন কর্মচারী বৈষম্যের শিকার।
তাদের দাবি অনুযায়ী, বর্তমানে এলজিইডি’তে যথেষ্ট শূন্য পদ বিদ্যমান। প্রধান প্রকৌশলী মহোদয়ও স্বীকার করেন জনবলের অভাবে উন্নয়ন প্রকল্প চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। উন্নয়নকাজে আমাদের ১৮ থেকে ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা এবং মহামান্য হাইকোর্ট ও সুপ্রীম কোর্টের রায় থাকা সত্ত্বেও তিনি আমাদেরকে আত্মীকরণ/রাজস্বকরণ স্থানান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।
তাদের দাবি, বাংলাদেশে দুই রকম আচরণের সুযোগ নাই এবং এটি সংবিধানের ২৭ এবং ২৯ অনুচ্ছেদের লংঘন। আমাদেরকে রাজস্ব বাজেটে আত্মীকরণ না করে প্রধান প্রকৌশলী মহোদয় সংবিদান লংঘন করছেন। এই দাবি আমাদের সংবিধানিক ও ন্যায্য অধিকার।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশনসহ আরও কঠোর কর্মসূচি পালনের ঘোষণাও দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।