
|| বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি ||
দেশব্যাপী আলোচিত সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় অগ্নীকান্ড, লুঠপাট ও দিনদুপুরে পিটিয়ে মর্মান্তিকভাবে ১৫ পুলিশ হত্যাকান্ডের মামলায় আসামী হিসেবে যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন সাবেক মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। রবিবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে জেলার বেলকুচি উপজেলার কামারপাড়ার নিজ গ্রাম থেকে আটক হয়েছেন তিনি।
এনায়েতপুর থানায় পুলিশ হত্যা মামলার ঘটনাটি সরকার পতনের আগের দিন গত ৪ আগস্ট। ঘটনার প্রায় ৫ মাস পর ওই মামলায় সন্দেহভাজন আসামী হিসেবে গ্রেপ্তার হলেন সাবেকমন্ত্রী লতিফ বিশ্বাস। মামলাটিতে ৪জন স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত আরো সাড়ে ছয় হাজার লোকজনকে আসামী করা হয়েছে। এর আগে সম্প্রতি ওই মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী এনায়েতপুরের বদিউজ্জামান ফকির ও ধনকুপ ছালাম ফকিরের সহোদর বড় ভাই বালুখোকো মান্নান ফকির।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মো: ফারুক হোসেন সন্ধায় জানান, ‘পুলিশ হত্যাকান্ডের মামলায় সন্ধিগ্ধ আসামী হিসেবে সেনা নিয়ন্ত্রিত যৌথ বাহিনীর একটি দল সাবেক মন্ত্রী লতিফ বিশ্বাসকে রবিবার দুপুরে তার গ্রামের বাড়ি থেকে আটক করে। এরপর তাকে জেলা সদরের সেনাক্যাম্পে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। লতিফ বিশ্বাসকে পুলিশ হত্যাকান্ডের মামলায় সন্ধিগ্ধ আসামী হিসেবে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরনের প্রক্রিয়া চলছে।’ এরআগে জেলা সেনাক্যাম্প ‘‘যৌথ বাহিনী গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে পুলিশে সোপর্দ করে।”
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক অন্যান্য মন্ত্রী-এমপি ও নেতাকর্মীরা নিজ নিজ এলাকা থেকে সটকে পড়লেও প্রবীন এ আওয়ামীলীগ নেতা লতিফ বিশ্বাস নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। স্থানীয়দের মতে, আর এটিই শেষ পর্যন্ত কাল হলো তার। সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি ও চৌহালী) আসনে তিনি দু’বার এমপি নির্বাচিত হলেও নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনায়ন পাননি। তারপরেও তিনি রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় ছিলেন। তিনি সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
লতিফ বিশ্বাসের সহধর্মিনী বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেগম আশানুর বিশ্বাস বলেন, ‘তার স্বামী একজন প্রবীন রাজনীতিবিদ। যথেষ্ট যোগ্য হওয়া সত্বেও নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাকে রহস্যজনকভাবে দল মনোনায়ন দেয়নি। তিনি ২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। যতদূর জানি তার নামে উল্লেখযোগ্য কোনো মামলাও নেই। নিজের লাইসেন্সকৃত দু’টি অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরকারের ঘোষিত সময়ের মধ্যেই থানায় জমা দেয়া হয়। তারপরও তার স্বামী স্থানীয় রাজনৈতিক রোষানল ও ষড়যন্ত্রের স্বীকার হলেন।’