বৃহস্পতিবার, জুন ১৯

একজন দক্ষ শিক্ষকই যোগ্য শিক্ষার্থী তৈরীর কারিগর: ইআবি উপাচার্য

ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ বলেছেন, একজন দক্ষ শিক্ষকই যোগ্য শিক্ষার্থী তৈরীর কারিগর। তিনি বলেন, শিক্ষকগণের দক্ষতা ও অধ্যক্ষগণের নিজস্ব দূরদর্শী চিন্তা, পরিকল্পনা ও যথাযথ কৌশলের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থা সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করতে পারলেই সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সার্থক। উপাচার্য আরও বলেন, ‘মাদরাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক ও প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আর্থিক এবং পরীক্ষা পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও শৃংখলা প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। সোমবার (১০ জুন) রাজধানীর একটি কনভেনশন হলে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত “প্রাথমিক পাঠদান ও পরীক্ষাকেন্দ্রের অনুমতিপ্রাপ্ত মাদরাসাসমূহের অধ্যক্ষগণকে নিয়ে প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক ও পরীক্ষা পরিচালনা সংক্রান্ত দক্ষতা উন্নয়ন” শীর্ষক দিনব্যাপি এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ইআবি উপাচার্য।

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ বলেন, সারা দেশের অধিভুক্ত প্রায় সকল প্রতিষ্ঠানসমূহের শিক্ষার্থীদের মাঝে মেধা বৃত্তি প্রদান ও বিভিন্ন শিক্ষামূলক বিষয়ের উপর প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের উৎসাহ প্রদানসহ সম্মানিত অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের নানামুখি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মাদরাসা শিক্ষার গুনগত মান উন্নয়ন এবং মানসম্মত দ্বীনি শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। এর ফলে প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থী সংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পাবে পাশাপশি শিক্ষা ব্যবস্থায় শৃংখলা ও নিয়মানুবর্তীতা প্রতিষ্ঠিত হবে। মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়নে ও মাদরাসা পরচিালনায় একাডেমিক, প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি এবং আর্থিক স্বচ্ছতা ও শৃংখলা আনায়নে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় বদ্ধপরিকর বলেন ইআবি উপাচার্য ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ।

উপাচার্য আরও বলেন, মাদরাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে একটি আদর্শ ও আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রথমেই আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এ ক্ষেত্রে শ্রেনীকক্ষে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান অর্জনে উৎসাহ প্রদান ও পাঠদানের সুষ্ঠু পরিবেশ প্রদান করা জরুরি।

কর্মশালায় আগত অধ্যক্ষগণের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আলিম স্তর থেকে ফাজিল স্তরে ও ফাজিল থেকে কামিল স্তরে উন্নীত করে পাঠদানের অনুমতি পাওয়া মাদরাসাগুলো তাদের যথাযোগ্য শর্ত ও প্রয়োজনীয় যোগ্যতা পূরণের মাধ্যমেই পাঠদানের সুযোগ পেয়েছে। মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে ও শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জনের পরিধি বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাদরাসাগুলোতে বিভিন্ন বিষয়ে পাঠদানের সু-ব্যবস্থা প্রদান করা হয়েছে।

উপাচার্য বলেন, এই প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা একটি চলমান প্রক্রিয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিশন ও মিশন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও শিক্ষকগণ তাদের নিজ প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান ও দক্ষতা প্রয়োগ করতে সক্ষম হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

কর্মশালায় মাদরাসার একাডেমিক, প্রশাসনিক ও আর্থিক ব্যবস্থপনা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন, প্রফেসর ড. সিরাজ উদ্দিন আহমাদ, সাবেক অধ্যক্ষ, সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়া, ঢাকা এবং ড. সৈয়দ মোহাম্মদ শরাফাত আলী, সাবেক অধ্যক্ষ, ছারছীনা দারুসসুন্নাত কামিল মাদরাসা, পিরোজপুর। এ সময় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন বিভাগ থেকে আগত প্রায় ১৩০টি মাদরাাসার সম্মানিত অধ্যক্ষগণ অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত ট্রেজারার, রেজিস্ট্রারসহ বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধানগণ ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।

উল্লেখ্য, গত প্রায় দের বছরে আলিম স্তর থেকে ফাজিল স্তরে উন্নীত হওয়া মাদরাসার সংখ্যা ২৭টি, ফাজিল স্তর থেকে কামিল স্তরে উন্নীত হওয়া মাদরাসার সংখ্যা ৪৪টি, নতুনভাবে অনার্স ও মাস্টার্স চালু হওয়া মাদরাসার সংখ্যা যথাক্রমে ৮টি ও ১৪টি এবং পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে ফাজিল, কামিল ও প্রাইভেট মাদরাসার সংখ্যা যথাক্রমে ২২টি, ৯টি ও ৬টি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *