
|| ডা. আনোয়ার সাদাত ||
বৈষম্য আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজের বড় ধরনের একটি সমস্যা, যা বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত একটি বিষয়। ২৪-এর ছাত্র জনতার আন্দোলনই ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে। বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের জন্য ন্যায়বিচার, সমতা এবং মানবাধিকারের গুরুত্ব অপরিসীম। মানবসমাজের সকল স্তরের মানুষ যেন সমান মর্যাদা এবং সুযোগ পায়, এই লক্ষ্যই একটি ন্যায়সংগত সমাজের ভিত্তি স্হাপন জরুরি। নবী মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জীবন ও শিক্ষা দ্বারা বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন। তাঁর শিক্ষা ও কর্মের মাধ্যমে, সমাজে বৈষম্য নির্মূল এবং সকল মানুষের মধ্যে সমতা প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন এবং বিনির্মাণ করেন একটি বৈষম্যমুক্ত সমাজ ব্যবস্হা।
ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা রাষ্ট্রের জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত মানুষের খাওয়া পরা বাসস্থান স্বাস্থ্য শিক্ষা এই প্রাথমিক ও বুনিয়াদি প্রয়োজনগুলোর পূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করে থাকে। ইসলামী হুকুমতে কেউ অভুক্ত হয়ে মৃত্যুমুখে পড়িত হয় না। প্রত্যেকের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। শিক্ষা, চিকিৎসা এবং সুবিচার সকল মানুষের জন্য বিনামূল্যে পাওয়ার ব্যবস্থা করা হয় এবং তাতে করে কারো হক কেড়ে নেওয়া হয় না, কাউকেও তার পাওনা থেকে বঞ্চিত করা হয় না। ইসলামে আইনের দৃষ্টিতে ছোট বড় গরিব ধনী, প্রজা শাসক উচু নিচু আপন পরের মধ্যে কোন পার্থক্য বা তারতম্য নেই।
ইসলামী খেলাফতে বড় বড় প্রবল প্রক্রান্ত শাসনকর্তাদের অপরাধের প্রকাশ্যে দন্ড দান করা হতো। ইসলামের সাম্যনীতি এবং সর্বসাধারণের সুবিচার প্রণালীর কি অনুপম ব্যবস্থা। ইসলামী সমাজে সকল লোকের জীবিকার যেমন সংস্থান করা হয়, ঠিক তেমনিভাবে সকল নাগরিকের ধন মান, তাদের প্রাণ রক্ষা করা ইসলামী সমাজে রাষ্ট্রের দায়িত্ব কর্তব্য এক্ষেত্রে কোনরকম বৈষম্য করা হয় না।
ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা মানুষের জন্য অত্যন্ত কল্যাণকর। ইনসাফ, সাম্য, অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা, সকল ক্ষেত্রে বৈষম্যহীন একটি ব্যবস্থা একমাত্র ইসলামী বিধি-বিধান বাস্তবায়নের মাধ্যমেই সম্ভব।
লেখক: ইসলামিক স্কলার, সাংবাদিক ও চিকিৎসক (খুলনা)।
