মঙ্গলবার, জুলাই ৮

ইমাম-খতিবদের রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার দাবি

|| নিউজ ডেস্ক ||

ইমাম ও খতিবরা সমাজের অত্যন্ত সম্মানিত মানুষ হওয়া সত্ত্বেও মসজিদ কমিটিতে থাকা রাজনৈতিক ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের কারণে তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারেন না। এ অবস্থায় ইমাম ও খতিবদের রাজনৈতিক ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের প্রভাবমুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছে জাতীয় ইমাম ও খতিব সংস্থা।

রবিবার (৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের একটি হলে জাতীয় ইমাম ও খতিব সংস্থা বাংলাদেশের আয়োজনে ‘ইনসাফভিত্তিক সমাজ গঠনে ইমাম ও খতিবদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে তারা এ দাবি জানান।

অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয় ইমাম ও খতিব সংস্থার আহ্বায়ক ও ঢাকা সানার পাড় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবু তাহের আল মাদানী। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অর্জিত বাংলাদেশে ইনসাফ ও ন্যায় বিচারে এবং সমাজের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইমাম ও খতিবদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু ইমাম ও খতিবগণ স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনে ক্ষমতাসীন ও প্রভাবশালীদের আধিপত্যের কারণে বার বার ব্যর্থ হচ্ছেন। আমরা চাই ইমামরা স্বাধীনভাবে কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে নির্দিধায় ধর্মের মৌলিক কথাগুলো মানুষের মাঝে তুলে ধরবে। সুদ-ঘুষ, মাদক ও চাঁদাবাজিতে জড়িতদের মসজিদ কমিটিতে স্থান দেওয়া যাবে না।

ইমামদের বক্তব্যদানের ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমাদের হেকমতের সঙ্গে দীনের দাওয়াত দিতে হবে। হিন্দু-খ্রিস্টান-ইহুদি কাউকে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাধা দেওয়া যাবে না। এটা আমাদের ধর্মীয় শিক্ষা। একইসঙ্গে আমাদের ধর্মীয় আচার-কৃষ্টি কালচারে বাধা দেওয়া যাবে না।

ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বেতন সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের তাকওয়া থাকবে আল্লাহর ওপর, বেতনের ওপর না। কিন্তু তাদের সম্মানজনক হাদিয়া নিশ্চিত করতে হবে। এটা বৈষ্যমবিরোধী লড়াইয়ে বিজয়ের সময়। অথচ আমরা সবথেকে বেশি বৈষম্যের শিকার। একইসঙ্গে মসজিদ কমিটি রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারা করা যাবে না।

মাওলানা মজিবুর রহমান হামিদী বলেন, ইসলামী রাষ্ট্র নিয়ে ভয়ভীতির কিছু নাই। ইসলামি রাষ্ট্র কায়েম হলে অমুসলিমরা বর্তমান সময়ে যেমন আছে তার থেকে ভালো থাকবে। ইসলাম অমুসলিমদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সদস্য সচিব মুফতি আবু আইমান বলেন, সমাজে ইমামগণ অবহেলা ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন সবচেয়ে বেশি। তাদেরকে বাদ দিয়ে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়।

অন্যান্য বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, আমরা আশা করছি জাতীয় ইমাম ও খতিব সংস্থা বাংলাদেশ সারাদেশে ইমাম ও খতিবদের আস্থার সংগঠনে পরিণত হবে ইনশাআল্লাহ। আমরা চাই ইনসাফভিত্তিক সমাজ গঠনে ইমাম ও খতিবগণ স্বাধীনভাবে কাজ করুক। আকিদা-জিকির নানাবিষয়ে পার্থক্য থাকবে কিন্তু ইসলামিক দলগুলোকে রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

এ সময় বিগত সরকারের পক্ষ থেকে তাদের দেওয়া সদনের কার্যকারিতা নেই উল্লেখ করে তারা বলেন, আমাদের একটা কাগজ দেওয়া হয়েছে (দাওয়ায়ে হাদিস সনদ)। যেটা দিয়ে কোনো কাজ হয় না। এটা দিয়ে কোনো কিছু করা যায় না।

মুফতি শাহাদাত হোছাইন জাফরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, আন্তর্জাতিক ক্বেরাত সম্মেলন সংস্থা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান, হাফেজ মাওলানা মো. তৈয়ব সাহেব; ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ; খেলাফতে মজলিসের মহাসচিব মাওলানা আহমদ আব্দুল কাদের, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, লেখক, গবেষক কামাল উদ্দিন; খেলাফত আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা মজিবুর রহমান হামিদী; অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *