সোমবার, ডিসেম্বর ২২

ইবিতে পিএইচডি কর্মের দ্বিতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত

|| নিজস্ব প্রতিবেদক ||

কুষ্টিয়াস্থ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষক মো: রফিকুল ইসলামের পিএইচডি কর্মের দ্বিতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় আল-হাদীস এণ্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের উদ্যোগে থিওলোজী এণ্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের সভাকক্ষে ‘সালাতুল বিতরের বিধান ও রাকাত সংখ্যা: একটি পর্যালোচনা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

গবেষক মো: রফিকুল ইসলাম, আল হাদীস বিভাগের অধীনে বিভাগীয় অধ্যাপক ও সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. মো: ময়নুল হকের তত্ত্বাবধানে ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষে ‘সালাত সংক্রান্ত বিপরীতধর্মী হাদীসের সমাধানে ফকীহগণের ভূমিকা: একটি পর্যালোচনা’ বিষয়ে গবেষণা করছেন। তার গবেষণাকর্মের রেজি. নং-৭২।

উক্ত পিএইচডি সেমিনারের প্রধান অতিথি ছিলেন অনুষদীয় ডীন প্রফেসর ড. মো: সেকান্দার আলী, বিশেষ অতিথি ছিলেন উক্ত গবেষণাকর্মের সম্মানিত তত্ত্বাবধায়ক আল-হাদীস এণ্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সাবেক সভাপতি ও প্রফেসর ড. মো: ময়নুল হক। সভায় সভাপতিত্ব করেন আল-হাদীস এণ্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের বর্তমান সভাপতি প্রফেসর ড. মো: আকতার হোসেন।

সেমিনারের নির্ধারিত মূল আলোচক ছিলেন প্রফেসর ড. আ.খ.ম. ওয়ালী উল্লাহ, আল-হাদীস এণ্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ইবি এবং প্রফেসর ড. মোহাম্মাদ নাছির উদ্দিন, আল-ফিকহ এণ্ড ল’ বিভাগ, ইবি।

সেমিনারে উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন থিওলোজী অনুষদের সাবেক ডীন প্রফেসর ড. এ. বি. এম. ফারুক ও প্রফেসর ড. এ বি এম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, আল-কুরআন বিভাগের সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন মিঝি, আল-ফিকহ এণ্ড ল’ বিভাগের সাবেক সভাপতি ও প্রফেসর শায়খ ড. মোহাম্মাদ জাকারিয়া মজুমদার, আইআইইআর এর সহকারী অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল-মামুন, রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের ড. মো: আহসানুল হক এবং ইবি কেন্দ্রীয় মসজিদের সম্মানিত খতিব জনাব আশরাফ উদ্দিন খান আল-আযহারী।

বিজ্ঞ আলোচকবৃন্দের আলোচনায় বিতর সালাতের বিধান ও রাকাত সংখ্যা সংক্রান্ত পরষ্পর বিরোধপূর্ণ হাদীসগুলোর সনদভিত্তিক ব্যাপক পর্যালোচনা উঠে আসে। বিতর সলাত ইমাম আবূ হানিফা রহ. এর নিকট ওয়াজিব এবং অন্যান্য ইমামগণের নিকট সুন্নাহ মুয়াক্কাদাহ। সমাজে সহীহ হাদীস ভিত্তিক এক রাকাত, তিন রাকাত,পাঁচ রাকাত, সাত রাকাত বিতর পড়ার যে পদ্ধতি চালু রয়েছে, তা নিয়ে বিরোধ তৈরী না করার আহবান জানানো হয়। হাদীসগুলোর বিশ্লেষণ থেকে যেটিকে সর্বোত্তম মনে হয় সেটিকে গ্রহণ করা, ভিন্ন মতের আমলকারীদের আমলকে খাটো করে না দেখা, যদি তা সহীহ হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত হয়- এ বিষয়ে জোর প্রদান করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মো: সেকান্দার আলী বলেন, বর্তমানে প্রচলিত তিন রাকাতের বিতর সলাতের পদ্ধতিটি আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ রা.থেকে বর্ণিত হাদীস দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। এক থেকে সাত রাকাত বিতর সলাত আদায়ের বিষয়েও সহীহ হাদীস রয়েছে।

বিশেষ অতিথির আলোচনায় গবেষণা তত্ত্বাবধায়ক প্রফেসর ড. মো: ময়নুল হক বলেন, আমাদের সমাজ ব্যবস্থা দিন দিন অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে, মুস্তাহাব বা সুন্নাহর আমলগুলো নিয়ে বাড়াবাড়ি, নিজের মতের পক্ষের হাদীসকে সহীহ বলে দাবী করে ভিন্ন মতের আমলকারীদেরটাকে দয়িফ হাদীস ভিত্তিক আমল বলে সাব্যস্তকরণ, গোড়ামিনা, রাসূল সা. এর একই আমল ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে আদায়ের প্রমাণিত হাদীসগুলো সম্পর্কে অজ্ঞতা, সমাজে ফিতনা ফাসাদের জন্ম দিচ্ছে। এ থেকে উত্তরণের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে, সহনশীল সমাজ বিনির্মাণে এ গবেষণা কর্মটি পরিচালিত হচ্ছে। আশা করি জাতি এ গবেষণা কর্ম দ্বারা উপকৃত হবে।

সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. মো: আকতার হোসেন বলেন, আমরা ভবিষ্যতে আল-হাদীস এণ্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ এর উদ্যোগে দুই মাস অন্তর অন্তর হাদীস ভিত্তিক গবেষণা সেমিনার আয়োজন করবো ইনশা আল্লাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *