
|| নিজস্ব প্রতিবেদক ||
বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত প্রথম তথ্যপ্রযুক্তি ও বিজ্ঞানভিত্তিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস (ইউআইটিএস)-এর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে “সিভিল ডে ২০২৫” উদযাপন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ৯ টায় রাজধানীস্থ বিশ্ববিদ্যালয়টির রত্নগর্ভা তাহমিনা রহমান মাল্টিপারপাস হলে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) জনাব মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ-এর সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন গ্রহণ করেন বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল (বিএসি)-এর পরিচালক (অ্যাক্রেডিটেশন) প্রফেসর নাসির উদ্দীন আহম্মেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আবু হাসান ভূঁইয়া এবং ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ), সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানার জনাব ধ্রুব আলম।
এ সময় “Transport Planning for Dhaka City and Future Scopes in Transport Sector” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিটিসিএ-এর ডেপুটি ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ার ডি, এম, গিয়াস মালিক।
প্রফেসর নাসির উদ্দীন আহম্মেদ প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ইউআইটিএস একটি ব্যতিক্রমী বিশ্ববিদ্যালয়, যা প্রতিষ্ঠা করেছেন একজন মানবিক মানুষ, একুশে পদকপ্রাপ্ত সমাজসংস্কারক, শিক্ষানুরাগী আলহাজ্ব সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, বর্তমানে অ্যাক্রেডিটেশন বৈশ্বিক চাহিদা। অ্যাক্রেডিটেশন ছাড়া শিক্ষার্থীদের সনদ অনেক সময় অবমূল্যায়িত হয়। তাই শিক্ষার্থীরা যেন ভুক্তভোগী না হয়, সে জন্য প্রোগ্রামের অ্যাক্রেডিটেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দেশে প্রায় ৪০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়কে অ্যাক্রেডিটেশনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে, যা আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। এখানে ৩২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ইউআইটিএস ও রয়েছে। ইউআইটিএস-এর পাঁচটি প্রোগ্রামের অ্যাক্রেডিটেশনের জন্য ইতোমধ্যে আবেদন করা হয়েছে, যার মধ্যে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং একটি। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, স্বল্প সময়ের মধ্যে ইউআইটিএস-এর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রাম অ্যাক্রেডিটেশন অর্জন করবে। তিনি সকলকে দেশপ্রেমে উদবুদ্ধ হয়ে নতুন করে দেশ গড়ার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই পৃথিবীতে বড় বড় কাজ সম্পন্ন হয়। তিনি সময় ও সুযোগের যথাযথ ব্যবহার করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য সকলকে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এ ধরনের অয়োজনের মাধ্যমেই শিক্ষার্থীরা নিয়মিতভাবে শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করবে। শিক্ষার পাশাপাশি সহশিক্ষা একজন শিক্ষার্থীকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে থাকে। তিনি অনুষ্ঠানে আগত সকল অতিথিকে স্বাগত ও কৃতজ্ঞতা জানান সেইসাথে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সকলকে ধন্যবাদ জানান।
উক্ত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য ও অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন ইউআইটিএস-এর কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সিরাজ উদ্দীন আহমেদ, সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ আশরাফুল ইসলাম, খন্ডকালীন শিক্ষক অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার ড. মোহাম্মদ রাশিদুল হাসান।
অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোঃ তারিকুল ইসলাম। তিনি সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। এ সময় অনুষ্ঠানে আগত সকল অতিথিকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পক্ষ থেকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং এলামনাইদের মধ্যে একটি সুন্দর বন্ধন সৃষ্টি ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার বহুমাত্রিক দিক তুলে ধরাই এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য। উক্ত অনুষ্ঠানে পূর্ববর্তী ইউসেক কমিটির সদস্যদের বিদায় জানানো হয় এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত বিভিন্ন ইনডোর গেমসের বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মঞ্জুরুল হাসান সাজিদ ও মেহেদি হাসান ধ্রুব। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন একই বিভাগের শিক্ষার্থী গাজী মশিউর রহমান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী, এলামনাই, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সিভিল ক্লাব (ইউসেক)-এর সদস্যবৃন্দ।
পরে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ব্যান্ড কনসার্টের আয়োজন করে। কনসার্টে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড ওল্ড স্কুল এবং বাগধারা তাদের সংগীত পরিবেশন করেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে স্পন্সর করে ক্যাড সেন্টার, প্রিফ্যাব্রিক্স বিল্ডিং সলিউশনস, গ্রিন ঢাকা প্রপার্টিজ লিমিটেড, গৃহবিলাস ডিজাইন এবং কন্সট্রাকশন, মানহা অদিতা বিল্ডার্স লিমিটেড, অপ্টিমাম বিল্ডিং ডিজাইন এবং কন্সট্রাকশন ও ডিজাইন সমাধান। অনুষ্ঠানটির মিডিয়া পার্টনার ছিল কালের কন্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন ও দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস।
