শনিবার, জুন ১৪

আসছে মুহাররম: হিজরি বছরের পবিত্র সূচনা

|| মোঃ আরিফুল ইসলাম | নিজস্ব প্রতিনিধি ||

আত্মশুদ্ধি, ঐতিহ্য ও ঈমানের মাস মুহাররম। ইসলামী বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস মুহাররম ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক দিক থেকে মুসলিম উম্মাহর জন্য বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। নববর্ষের এই পবিত্র সূচনায় রয়েছে আত্মসমালোচনা ও আত্মশুদ্ধির আহ্বান, যা সময়ের পরিবর্তন নয়, বরং জীবনের নবায়নের বার্তা বহন করে।

মুহাররমকে চারটি সম্মানিত মাসের একটি হিসেবে কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে এই মাসে সংঘাত ও রক্তপাত নিষিদ্ধ এবং আত্মসংযমের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়।

ইতিহাসের পাতায় মুহাররমের স্থান অত্যন্ত গভীর। এই মাসের দশম দিন আশুরায় নবী মূসা (আ.) ও বনী ইসরাঈল ফেরআউনের অত্যাচার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। নবী নূহ (আ.) এর নৌকা প্লাবন থেকে মুক্তি পায়। এছাড়াও ইয়ূনুস (আ.), ইয়াকুব (আ.) ও অন্যান্য নবীদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তও এই মাসে সংঘটিত হয়েছে।

অবশ্য মুহাররম মাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও আবেগঘন অধ্যায় হলো কারবালার ইতিহাস, যেখানে মহানবীর দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রা.) ন্যায়ের পথে নিজ জীবনের আযান পেশ করেন। এই ত্যাগ আজও মুসলিম বিশ্বে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর এক অবিস্মরণীয় প্রতীক।রাসূলুল্লাহ (সা.) আশুরার রোযা রাখতেন এবং উম্মাহকেও তা পালন করার তাগিদ দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে, আশুরার রোযা পূর্ববর্তী বছরের পাপমোচন করে। এই মাসে ইবাদত-বন্দেগি, দোয়া ও তওবা গ্রহণ বিশেষ গুরুত্ব পায়।

নতুন হিজরি বর্ষ আমাদের জন্য এক নতুন অঙ্গীকার হতে পারে—বিচার, ন্যায় ও পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে জীবনকে আলোকিত করার। মুহাররম মাস কেবল সময়ের পরিবর্তন নয়, বরং বিশ্বাস ও মূল্যবোধের নবজন্ম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *