
|| ডা. আনোয়ার সাদাত ||
আল্লাহর পথে দাওয়াত দানের অর্থ দুনিয়া ও আখিরাতের চিরন্তন কল্যাণ লাভের পথে আহবান করা। দ্বীন প্রচারের দায়িত্ব পালনকারী মুমিনদের সর্বোত্তম মানুষ বলে ঘোষণা করা হয়েছে পবিত্র কোরআনে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘ওই ব্যক্তির চেয়ে কথায় কে উত্তম—যে আল্লাহর প্রতি মানুষকে আহ্বান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি তো মুসলমানদের একজন।’ (সুরা ফুসসিলাত, আয়াত- ৩৩)।
আল্লাহ বলেন, ‘আমি মানুষ ও জ্বিন জাতিকে কেবলমাত্র আমার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি’ (সুরা যারিয়াত, আয়াত- ৫৬)।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি আপনার রবের দিকে আহ্বান করুন হিকমত বা প্রজ্ঞা দ্বারা, সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা এবং তাদের সঙ্গে উত্কৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা করুন। (সুরা নাহল, আয়াত- ১৬)।
পৃথিবীতে মানুষের আগমনের পর থেকে আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছে এবং ঈমানের উপর টিকে থাকতে পেরেছে এমন মানুষের সংখ্যা অতি অল্প। অধিকাংশই হয়েছে পথভ্রষ্টদের দলভুক্ত। আল্লাহকে ভুলে গিয়ে সে আপন প্রবৃত্তির দাসে পরিণত হয়। বিপরীতমুখী আকর্ষণ তথা শয়তানী প্ররোচনার কালো আঁধারে সে নিজেকে হারিয়ে ফেলে। এভাবে সে নিজের অজান্তেই দুনিয়া ও আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের দলভুক্ত হয়ে পড়ে।এই পথভোলা মানুষদেরকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার জন্য আল্লাহ যেমন যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রাসুলকে প্রেরণ করেছেন। নবী-রাসুলের যেহেতু আর আগমন ঘটবে না, তাই এই দায়িত্ব এখন তাদের উপর, যারা নবী-রাসুলদের অনুসরণ করার মাধ্যমে হেদায়েতপ্রাপ্ত হয়েছেন।
আদম (আ.) থেকে শুরু করে মুহাম্মাদ (সা.) পর্যন্ত সকল নবী-রাসুল এই দায়িত্ব নিয়েই তথা মানবসমাজকে আল্লাহর পথে প্রত্যাবর্তনের দাওয়াত নিয়ে দুনিয়ার বুকে আগমন করেছিলেন। আল্লাহ বলেন, ‘আমি প্রতিটি কওমের মধ্যে রাসুল প্রেরণ করেছি। মানুষের জন্য এই দাওয়াত নিয়ে যেন তারা আল্লাহর ইবাদত করে এবং ত্বাগূতকে বর্জন করে’। (সুরা নাহল, আয়াত- ৩৬)।
শেষনবীর আগমনের মাধ্যমে নবুয়তের সিলসিলা শেষ হওয়ার পর এ দায়িত্ব এখন উম্মতে মুহাম্মাদীর তথা মুসলমানদের উপর।
“তোমরাই সর্বোত্তম জাতি যাদের উত্থান ঘটানো হয়েছে মানবজাতির কল্যাণের জন্য। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে এবং অন্যায় কাজে নিষেধ করবে’..(আলে ঈমরান ১১০)।
তাই, নামাজ রোজা যেমন আমাদের উপর ফরজ ঠিক তেমনই পথভ্রষ্ট মানুষদের আল্লাহর পথে আহবান করা, তাদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করাও আমাদের উপর ফরজ।
লেখক: ইসলামিক স্কলার, সাংবাদিক ও চিকিৎসক (খুলনা)।