বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১

আবারো আশান্ত মণিপুর, মিলল আরো ৬ মরদেহ

|| আন্তর্জাতিক ডেস্ক ||

ভারতের মনিপুর রাজ্যে আবারো অশান্তি শুরু হয়েছে। গত দুই দিনে সেখানে আরো ৬ জনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় উত্তেজনা আরো বাড়ছে।

প্রশাসনের কাছে স্থানীয়দের দাবি, উত্তপ্ত মণিপুরে যত দ্রুত সম্ভব ‘শান্তি’ ফেরাতে হবে। শুধু তা-ই নয়, সশস্ত্র জঙ্গিগোষ্ঠীদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর পদক্ষেপের দাবি উঠেছে।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের সরকারকে ২৪ ঘণ্টা সময়ও বেঁধে দিয়েছে মেইতেইরা। জিরিবাম জেলায় ৬ জনের অপহরণ এবং খুনের বিচার চেয়ে সে রাজ্যে প্রতিবাদ চলছে।

শনিবার রাতে সেই বিক্ষোভ পৌঁছে যায় মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে। বিক্ষুদ্ধদের অভিযোগ, রাজ্যের দুই মন্ত্রী এবং বিধায়কের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীরা কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে কোনও রকমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন।

গত কয়েক দিনে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মণিপুর। জিরিবাম, পশ্চিম ইম্ফল ও বিষ্ণুপুরসহ একাধিক জেলায় সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

এবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্যজুড়ে ৬ থানা এলাকায় নতুন করে বলবৎ করা হয়েছে ‘সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন’ (‘আর্মড ফোর্সেস স্পেশ্যাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ বা আফস্পা)।

উল্লেখ্য, গত মাসের শুরুতেই মণিপুরে ছ’মাসের জন্য বর্ধিত হয়েছিল আফস্পা-র মেয়াদ। ইম্ফল, বিষ্ণুপুর, জিরিবাম-সহ ১৯টি থানা এলাকা বাদ দিয়ে গোটা রাজ্যেই এই আইনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছিল।

তবে বৃহস্পতিবার থেকে নতুন করে আরও ৬ থানায় আফস্পা বলবৎ হয়েছে। শনিবারের পর থেকে আবার একবার আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি উঠেছে। চাপের মুখে মণিপুর সরকারও কেন্দ্রের কাছে এই দাবি জানিয়েছে।

গত কয়েক দিনে মণিপুরের পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সে রাজ্যে সম্প্রতি কুকি জঙ্গি এবং সিআরপিএফ জওয়ানদের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। অভিযোগ, সেই সময় একদল কুকি জঙ্গি মেইতেই সম্প্রদায়ের তিন নারী এবং তিন শিশুকে অপহরণ করে।

ওই ৬ জন ছিলেন মেইতেই সম্প্রদায়ের। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন ১০ কুকি জঙ্গি। যদিও কুকি সম্প্রদায়ের দাবি, নিহত ১০ জন ছিলেন ‘গ্রামের স্বেচ্ছাসেবী’। জিরিবাম জেলা থেকে একই পরিবারের ৩ নারী এবং তিন শিশুকে অপহরণের অভিযোগও উঠেছিল কুকি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় আসাম-মণিপুর সীমানায় জিরি নদীতে তিনটি দেহ ভাসতে দেখা যায়। জিরিঘাট এলাকা থেকে ওই তিন মরদেহ উদ্ধার করে শুক্রবার রাতে আসামের শিলচরের মর্গে পাঠানো হয়।

সেখানে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে সেই মরদেহগুলির ময়নাতদন্ত করা হয়। শনিবার আরও তিনটি মরদেহ উদ্ধার হয়। তার পর থেকেই পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে উঠছে। রাজধানী ইম্ফলের দিকে জ্বলেছে আগুন।

অশান্ত মণিপুর নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক সহিংসতা। কংগ্রেস নেতা তথা এমপি রাহুল গান্ধী আরেকবার নরেন্দ্র মোদিকে মণিপুরে যাওয়ার কথা বললেন।

রাহুলসহ কংগ্রেসের অন্যান্য নেতানেত্রী এর আগেও বারবার একই দাবি জানিয়েছেন। শনিবারের পর সেই দাবি আরও জোরালো হল। মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এখনও কোনও মন্তব্য করা হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *