বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ৯

আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীরের নামে ইবিতে হল বা অ্যাকাডেমিক ভবনের নামকরণের দাবি

|| আবির হোসেন | ইবি প্রতিনিধি ||

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রয়াত অধ্যাপক ড. খোন্দকার আ ন ম আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের নামে অ্যাকাডেমিক ভবন বা আবাসিক হলের নামকরণের দাবি জানিয়েছেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নিজ ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেইজে এক স্টাটাসের মাধ্যমে এ দাবি জানান তিনি। পরে শিক্ষার্থীরা তার দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একই দাবি জানিয়ে স্ট্যাটাসটি শেয়ার করলে তা ভাইরাল হয়।

স্টাটাসে তিনি বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত সিরাত সম্মেলনে গিয়ে শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস এবং শিক্ষকদের আন্তরিকতা মুগ্ধ করলেও একটি শূন্যতা হৃদয় থেকে অনুভব করেছি। সেটা হলো, বিশ্ববিদ্যালয়টির বরেণ্য প্রফেসর ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহর নামে একটি অ্যাকাডেমিক কিংবা আবাসিক হল না থাকার শূন্যতা।

তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যার ছিলেন দেশের সম্পদ এবং জাতির জন্য আল্লাহর এক নেয়ামত। তিনি শুধু প্রাজ্ঞ আলেমই ছিলেন না, তিনি ছিলেন দরদী সমাজ সংস্কারক। বক্তৃতা ও রচনার মাধ্যমে জীবনভর তিনি শিরক, বিদআত, খ্রিস্টান মিশনারীর অপতৎপরতা সম্পর্কে দেশবাসীকে সচেতন করেছেন। তার এই ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অসংখ্য মানুষ সঠিক পথের দীশা পেয়েছে। আবার শতধা বিভক্ত জাতিকে তিনি যেভাবে ঐক্যের পথ দেখিয়েছেন, সেটাও এই দেশের প্রেক্ষিতে বিরল। তিনি আমাদেরকে প্রান্তিকতা ছেড়ে মধ্যমপন্থা শিখিয়েছেন। চিন্তার ভিন্নতা সত্ত্বেও ঈমানের অভিন্নতায় সকল মানুষকে কীভাবে কাছে টানতে হয় শিখিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে তার মতো আরো অনেক গবেষক নিশ্চয় আছেন, কিন্তু তার মতো এতটা জনবান্ধব, গণমুখী এবং সর্বশ্রেণির কাছে সমাদৃত লেখক-গবেষক খুব কমই আছেন। আবার কর্মের গুণে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সকল শিক্ষক দেশব্যাপী পরিচিতি পেয়েছেন, তিনি তাদের শীর্ষে।

তিনি আরও বলেন, ইসলামিক সাবজেক্টের শিক্ষক হিসেবে ইসলামকে তিনি শুধু ক্লাসরুমেই সীমাবদ্ধ রাখেননি, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিচয়ে ইসলামের বার্তা নিয়ে তিনি সারা দেশ চষে বেড়িয়েছেন, ইসলামকে গণমানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। অন্য কোনো শিক্ষকের ক্ষেত্রে এমন নজির বিরল। এর মাধ্যমে তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কেও দেশবাসীর কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত করেছেন। ফলে সর্বজনশ্রদ্ধেয় বরেণ্য এই আলেমের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি হল থাকা যুক্তি ও জন-আকাঙ্ক্ষার দাবি। মৌলিক গবেষণাকর্মের মাধ্যমে স্যার যে হীরকতুল্য রচনাভাণ্ডার রেখে গেছেন, বিশ্বাস করি, সেগুলোই তাকে অমর করে রাখবে। স্যারের নামে যদি কোনো একটি হলের নামকরণ করা হয়, তবে এর মাধ্যমে তার অবদানের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া হবে। পাশপাশি নবীন শিক্ষার্থীরাও স্যারের কল্যাণমূলক চিন্তার সাথে পরিচিত হতে উদ্বুদ্ধ হবে।

শায়খ আহমাদুল্লাহর এই স্ট্যাটাসের পর শিক্ষার্থীরা একই দাবি জানিয়ে পোস্টটি শেয়ার করতে থাকে। ওই পোস্টের কমেন্টে শিক্ষার্থীরা একাত্মতা প্রকাশ করে মন্তব্য করেছেন যে, ‘উনার মতো জ্ঞানী, গুণী এবং সর্বজনীন গ্রহণীয় ব্যক্তি ইবিতে আর দ্বিতীয়টি আসবে কিনা! আল্লাহই ভালো জানেন। এটা একটা উত্তম প্রস্তাব।’

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমাদের চিন্তা ভাবনা রয়েছে। ধর্মতত্ত্ব অনুষদের সকলের সঙ্গে বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।

প্রসঙ্গত, গতকাল বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সিরাতুন নবি সা. উদযাপন উপলক্ষ্যে ‘বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সুন্নাতে রাসুল্লাহ (সা.) শীর্ষক’ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিরাত বক্তা হিসেবে ছিলেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *