
|| নিজস্ব প্রতিবেদক ||
দীর্ঘ ১৭ বছরের প্রবাসজীবন ও রাজনৈতিক নির্বাসন কাটিয়ে দেশে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর এক আবেগঘন পরিবেশে দেশের মাটিতে পা রাখেন তিনি। সেখান থেকে সরাসরি পূর্বাচলের ‘জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ে’ (৩০০ ফিট) সংলগ্ন গণসংবর্ধনা সমাবেশে যোগ দিয়ে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানান।
সমাবেশে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে তারেক রহমান মার্কিন নাগরিক অধিকার নেতা মার্টিন লুথার কিংয়ের ঐতিহাসিক ভাষণের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, “মার্টিন লুথার কিং বলেছিলেন— ‘আই হ্যাভ এ ড্রিম’। আজ এই বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে আমি বলতে চাই— আই হ্যাভ এ প্ল্যান (আমার একটি পরিকল্পনা আছে)।” তিনি স্পষ্ট করেন যে, এই পরিকল্পনা দেশের সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন, টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য।
ভাষণে তিনি একটি বৈষম্যহীন ও নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, “আমি এমন এক বাংলাদেশ চাই যেখানে একজন নারী, শিশু বা সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হয়ে নিরাপদে আবার ঘরে ফিরতে পারবে। আমরা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গড়ে তুলব।” এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি দেশের সকল স্তরের মানুষের সহযোগিতা ও দোয়া প্রার্থনা করেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে তারেক রহমান লন্ডন থেকে সিলেট হয়ে ঢাকা পৌঁছান। তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান এবং কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান। বিমানবন্দরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষ নেতারা তাকে স্বাগত জানান। বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে তিনি মাটির স্পর্শ নেন এবং কিছুক্ষণ খালি পায়ে দাঁড়িয়ে থাকেন, যা উপস্থিত নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক আবেগের সৃষ্টি করে।
বিমানবন্দর থেকে সংবর্ধনা মঞ্চে যাওয়ার পথে রাস্তার দুই পাশে হাজার হাজার মানুষ তাকে অভিনন্দন জানায়। তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে তিনি অসুস্থ মা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান এবং সেখান থেকে গুলশানের বাসভবনে পৌঁছান।
